আসসালামুয়ালাইকুম প্রিয় বন্ধুরা আজকাল আমরা নানা শারীরিক সমস্যায় ভোগী।তার মধ্যে অন্যতম একটি সমস্যা হল রাতে ঠিকমতো ঘুম না হওয়া আর রাতে ঠিকমতো ঘুম না হওয়ার কারণে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দেয় যেমন ডিপ্রেশন ডায়াবেটিস মেমোরি লস মাথা ব্যাথা খিদে কমে যাওয়া ইত্যাদি এগুলো তার মধ্য থেকে শুধু কয়েকটা নাম মাত্র এর থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আমরা অনেক কিছু উপায় অবলম্বন করে থাকি কিন্তু তাতে কোন উপায় আমরা পাই না আজ আমরা জানবো। রাতে ঘুম না হওয়ার কারণ সেই নিয়েই আমাদের আজকের এই পোষ্ট। ঘুম শরীরকে চাঙ্গা করে পরবর্তী দিনের কাজের জন্য আমাদের তৈরি করে অনেকেই রয়েছেন যারা ঘুম না হওয়ার সমস্যায় ভোগেন এই সমস্যায় অবসাদ ও ক্লান্তি তৈরি করে কর্ম ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এ ধরনের সমস্যায় ভোগেন ।তারা হয়তো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভরসা করেন ঘুমের ওষুধের উপর। এভাবে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ ব্যবহার করলে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর হয়ে পড়ে। প্রতিদিন রাতে ঘুমের ঔষধ একেবারে খাওয়া উচিত নয় ।ঘুমের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জ্বালা সহ্য করতে করতে মানুষ একেবারে অচল হয়ে পড়ে। অনেকদিনের এই জ্বালানোর কিছু ঘরোয়া উপায়ে অবশ্যই রয়েছে ।সেই উপায় গুলো আমাদের আজকের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। সেগুলো একবার দেখে নেয়া যাক।
রাতে ঠিকমতো ঘুম না আসার একটি কারণ :
রাতে ঠিকমতো ঘুম না আসার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে— ঘুমাতে যাওয়ার আগে চা, কফি বা নিকোটিন জাতীয় কিছু সেবন করা। সারাদিন কাজের শেষে যদি মনে করেন যে, এগুলো পান করে কিছুটা রিল্যাক্স হবেন, তা হলে আপনি ভুল ভাবছেন। বরং সেটিই হতে পারে আপনার রাতে ঠিকমতো ঘুম না হওয়ার কারণ।সূর্য ডোবার পরে একটু আধটু গলা ভেজানোর অভ্যাস অনেকেরই রয়েছে। একেক জনের এক এক রকম পানীয় পছন্দ। স্কচ, হুইস্কি, ওয়াইনের পাশাপাশি রঙিন পানীয়র জগতে বেশ কদর রয়েছে বিয়ারের (Beer Drinking)। ঠান্ডা ঠান্ডা একটু বিয়ার গলায় ঢাললেই যেন সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। কিন্তু এতেই বেড়ে যাচ্ছে আপনার মস্তিষ্কের বয়স। অসময়েই মগজাস্ত্রের ধার কমে যাচ্ছে।ঘুম না আসার অনেক কারণের মধ্যে একটি কারণ সারাদিনের পরিশ্রমের ক্লান্তি হতে পারে। এমন ক্ষেত্রে উষ্ণ গরম জলে স্নান করলে শরীর আরাম পায়। ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত ২ ঘণ্টা আগে উষ্ণ গরম জলে স্নান করা উচিত। এতে শরীর ঠান্ডা হওয়ার সময় পায়।
ঘুম কম হলে যেসব সমস্যা হয়:
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বৃদ্ধি করে: দিনে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে বা কম হলে বাড়তে পারে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা। চিকিত্সকদের মতে আমরা না ঘুমালে আমাদের শরীরের ‘লিভিং অরগানিজম’গুলো ঠিক মতো কাজ করতে পারে না। নষ্ট হতে পারে শরীরের হরমোনের ভারসাম্য। বাড়তে পারে উচ্চ রক্তচাপ, হাইপার টেনশনের মতো সমস্যা।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়: দীর্ঘদিন রাতে না ঘুমানো বা কম ঘুমানোর ফলে শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন ব্যহত হয়। যার ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে।
হজমের সমস্যা বৃদ্ধি করে: প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে বাড়তে পারে হজমের সমস্যাও। আমরা না ঘুমালে আমাদের শরীরের পাচন ক্রিয়ায় সাহায্যকারী অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলি সঠিক ভাবে কাজ করতে পারে না। ফলে খাবার হজমে সহায়ক পাচক রসগুলি উপযুক্ত মাত্রায় নিঃসরণে বাধা পায়। তাই হজমের নানা সমস্যা শুরু হয়।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে: ঘুম মূলত আমাদের শরীরের ক্ষয়ক্ষতি পূরণ ও শক্তি সঞ্চয়ের একটি পন্থা। যখন আমরা ঘুমোই, তখন আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য দায়ী ‘লিভিং অরগানিজম’ (Living organisms) কাজ করতে থাকে। কিন্তু আমরা না ঘুমালে এই ‘লিভিং অরগানিজম’গুলো কাজ করতে পারে না। ফলে ক্রমশ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে।
রাতে ভালো ঘুম না হওয়ার প্রতিকার :
প্রিয় ভিউয়ার্স নিচে ঘুম না হওয়ার প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করা হলো।
ঘুম আসার প্রাকৃতিক উপায়:
1. বিছানা থেকে উঠে যান: অনেকেই আছেন যাঁরা ঘুম না এলেও ঘুম আসার জন্য বিছানার এপাশ ওপাশ করতে থাকেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই খেলা বন্ধ করুন এবং বিছানা থেকে উঠে যান। ২০, ৩০, ৪০ মিনিট- যতক্ষণ না ঘুম আসে বিছানায় আসবেন না। এই ৩০ থেকে ৬০ মিনিট এমন কিছু করুন যা আপনাকে ক্লান্ত করে দেবে। এই ক্লান্তি ঘুম আসতে সাহায্য করবে।
2.শারীরিক পরিশ্রম: শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম ঘুম আসতে কার্যকর প্রাকৃতিক ওষুধ। বিশেষজ্ঞরা বলেন, যাঁরা শারীরিক পরিশ্রম করেন, তাঁদের ঘুম ভালো আসে। তাই ভালো ঘুম হতে নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করুন।
3.গরম পানিতে গোসল: ঘুম না আসার সমস্যা হলে রাতে বিছানায় যাওয়ার আগে উষ্ণ গরম পানি দিয়ে গোসল করুন। এই পদ্ধতি শরীরকে শিথিল করে ঘুম আসতে সাহায্য করবে।
4.শোবার ঘর: ভালো ঘুমের জন্য শোবার ঘরও হওয়া চাই উপযুক্ত। আপনি হয়তো এমন ঘরে ঘুমালেন, যার আশপাশে অনেক শব্দ হয় বা প্রচুর আলো এসে পড়ে। এগুলো ঘুমকে ব্যাহত করে। তাই শোবার ঘরের কিছু পরিবর্তন জরুরি। একটু মন দিয়ে ভাবুন কী পরিবর্তন করলে আপনার শোবার ঘরটি ঘুমের উপযুক্ত হবে? সেটা হতে পারে ম্যাট্রেসের পরিবর্তন বা জানালায় ভারী পর্দা লাগানো। এ ছাড়া ভালো ঘুমের জন্য টিভি, কম্পিউটার এসব জিনিসগুলোও শোবার ঘর থেকে দূরে রাখুন। কেননা এগুলোও ভালো ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়।
প্রিয় বন্ধুরা বাড়িতেই খুব সহজে এই বিষয়গুলি করে দেখতে পারেন। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে হ্যাঁ, ঠিকঠাক ঘুম আসার জন্য আরও কয়েকটি বিষয় আপনাকে মেনে চলতে হবে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কফি পান করবেন না, ধূমপান করবেন না, হালকা খাবার খাবেন, আর হ্যাঁ মোবাইল বা ল্যাপটপের থেকে দূরে থাকবেন।