বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশের নামক রাষ্ট্রের পরিস্থিতি এক গৌরবময় বিজয় গাথা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা রয়েছে দীর্ঘ 9 মাসের রোজার ইতিহাস এর স্বাধীনতা হঠাৎ করে কোথাও কুড়িয়ে পাওয়া এক মুঠো মুক্ত বা উপহার নয় ।এই বাংলাদেশ এক সাগর রক্ত 30 লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এই স্বাধীনতা। মুক্তিসেনার রক্তে রঞ্জিত সুদীর্ঘ সংগ্রামের ফসল। আমাদের স্বাধীনতার সঙ্গে অনেক সংগ্রামী চেতনা বিজড়িত 1971 সালে 30 লক্ষ জীবনের বিনিময়ে তারমধ্যে 2 লক্ষ মা-বোনের সম্মান এর বিনিময়ে আমাদের আমাদের দেশ স্বাধীন হয়। বন্ধুরা আর কথা না বাড়িয়ে আপনারা যদি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। এবং আজকের এই পোস্টটি ভালো করে মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভূমিকা :
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ শুরু হয়েছিল কিন্তু বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রাম যুগ – যুগ ধরে চলে এসেছিল । অবশেষে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ৩০ লক্ষ শহিদের রক্ত ও অসংখ্য মা – বােনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এর সমাপ্তি ঘটে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের মাধ্যমে । এ দিন পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে । বাংলাদেশের । মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস একদিকে যেমন করুণ , শােকাবহ , এর লােমহর্ষক অন্যদিকে ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত ও বীরত্বপূর্ণ ।
মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি :
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর বাংলা ‘পূর্ব পাকিস্তান’ নামে পাকিস্তানের একটি অংশে পরিণতহয়। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী তাদের শােষণ ও বঞ্চনার মাধ্যমে এদেশকে পাকিস্তানের একটি উপনিবেশে পরিণত করে। এমনকি পাকিস্তানি স্বৈরশাসক উর্দুকে রাষ্ট্রভাষার ঘােষণা দিয়ে আমাদের কণ্ঠরােধ করতে উদ্যতহয়। কিন্তু এদেশের ছাত্রজনতা এমন ঘােষণায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তাদের দমাতে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতৎকালীন শাসকগােষ্ঠী ১৪৪ ধারা জারি করে এদেশের ভাষাপ্রেমী ছাত্রসমাজ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাজ পথে নেমে আসে। পুলিশের গুলিতে নিহত হয় সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অনেকে। নিহতের খবরে পুরাে দেশে দুর্বার আন্দোলন গড়ে উঠে। ফলে পাকিস্তানিরা বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিতে বাধ্য হয়। এরইধারাবাহিকতায় ১৯৬২ সালে শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালে ছয়দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালে গণ-আন্দোলন সংঘটিত হয়।১৯৭০ সালে জেনারেল ইয়াহিয়া খান জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের ঘােষণা দেয়। আওয়ামী লীগ ১১ দফারভিত্তিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং উভয় পরিষদেই পূর্ব পাকিস্তান সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু শাসকগােষ্ঠী আওয়ামীলীগের এ বিজয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করে। এর ফলে সারাদেশে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে।
মুক্তবাহিনী গঠন :
স্বাধীনতা সংগ্রামকে বেগবান করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর নেতৃত্বে বাংলাদেশকে ১১ টি সেক্টরে ভাগ করা এ দেশের অগণিত ছাত্র – জনতা , পুলিশ , ইপিআর , মুক্তবাহিনী গঠন : স্বাধীনতা সংগ্রামকে বেগবান করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর নেতৃত্বে বাংলাদেশকে ১১ টি সেক্টরে ভাগ করা হয় । এ দেশের ছাত্র – জনতা , পুলিশ , ইপিআর , আনসার ও সামরিক – বেসামরিক লােকদের সমন্বয়ে মুক্তিবাহিনী গঠন করা হয় । পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে দেশকে মুক্তি করার লক্ষ্যে তারা যুদ্ধ কৌশল , অস্ত্রচালনা ও বিস্ফোরক ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয় । যতই দিন যেতে থাকে ততই সুসংগঠিত হয় মুক্তিবাহিনী । মুক্তিবাহিনী গেরিলা যুদ্ধে রীতি অবলম্বন করে । শত্রুদের বিপর্যস্ত করে । বিশাল শত্রুবাহিনী আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ও প্রশিক্ষণ নিয়েও মুক্তিবাহিনীর মােকাবিলায় সক্ষম হচ্ছিল।
৭ই মার্চের ভাষণ :
১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে জয়লাভ করার পর ক্ষমতাহস্তান্তর না করায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এরূপ পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ৩রা মার্চজাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডেকেও অপ্রত্যাশিতভাবে ১লা মার্চ তা অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতবি ঘােষণা করেন। এই খবরশুনে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। অবশেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মার্চের সাত তারিখে ঢাকায়রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সােহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক জনসভায় ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি চলমান সামরিক আইনপ্রত্যাহার, সৈন্যদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া, গণহত্যার তদন্ত ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের উপরগুরুত্বারােপ করেন। তার এ ভাষণ ছিল জাতির মুক্তিসংগ্রামের পূর্ণাঙ্গ দিক নির্দেশনা। তাই তিনি বলেছিলেন, “তােমাদেরযার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মােকাবিলা করবে