মে দিবসের শুভেচ্ছা বাণী ও বাস্তবতা

Native Banner

আজকের দিনে তারা শ্রমিকদের পূর্বসূরিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর কথা বলবে, কিন্তু বলবে না- কেনো ১৮৮৬ সালে শ্রমিকরা প্রাণ দিয়েছিলেন, তারা বলবে না তাদের দাবি কী ছিলো। এই ‘না বলা’র কারণটা সোজা। ১৩৫ বছর আগে যে দাবীগুলো-অধিকারগুলো জীবন দিয়ে তারা আদায় করেছিল, তা আজো এদেশের শ্রমিকদের জন্য কার্যকরী হয়নি। ১৮৮৬ সালে, পূর্বসূরিরা দিনের ২৪ টা ঘন্টাকে ৩ ভাগে ভাগ করেছিলেন (৮ ঘন্টা কাজ, ৮ ঘন্টা বিশ্রাম আর ৮ ঘন্টা বিনোদন), ৮ ঘন্টা শ্রমের দাবি করেছিলেন। জীবন দিয়ে তারা সেই দাবিকে সর্বজনীন করেছেন। সারা দুনিয়ায় এখন এটা অন্তত কাগজ-কলমে লেখা থাকে, বেশিরভাগ দেশেই কার্যকরও হয়। এরপর দিনে দিনে আরো আরো অনেক দাবি, অনেক অধিকার সম্মিলিত হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার, অধিকার আদায়ে ধর্মঘট করার অধিকার, নিরাপদ কর্মপরিবেশের নিশ্চয়তা— ইত্যাদি অধিকারগুলোও যুক্ত হয়েছে। এমনকি আজকের দিনে গণতন্ত্রের যে ন্যূনতম শর্ত, সকলের জন্য ‘ভোটাধিকার’, সেটাও শ্রমিকদেরই লড়াকু অবদান, বিশেষত শ্রমজীবী নারীদের।

আজকের বাস্তবতা

৮ ঘন্টা কাজ! বাস্তবতা হলো- কিছুদিন আগেও ৮ ঘন্টা কাজের দাবি করায় চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে ৭ শ্রমিককে। আপনারা কেউ কি বলতে পারেন কোনো কারখানায়, কোনো গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে ৮ ঘন্টা ডিউটি আছে কিনা? হ্যাঁ, কিছু সোয়েটার ফ্যাক্টরি পেতে পারেন ইপিজেড এলাকায়, যেখানে ‘অটোমেটিক জ্যাকার্ড মেশিন’ আছে, যেগুলো ২৪ ঘন্টা চালু রাখতে হয়। সেই ৮ ঘন্টা ডিউটির কাহিনী হলো- সর্বনিম্ন বেতন দিয়ে কাজ করানো, ৮০০০ থেকে ১০০০০ টাকা মজুরি। এখানে একটা বিষয় মনে রাখতে হবে- বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শিল্প খাত গার্মেন্ট খাতের সর্বনিম্ন মজুরিও অন্যান্য দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। সাথে সাথে এটাও মনে রাখতে হবে- বাংলাদেশের জিডিপি’র ‘উর্ধ্বমুখী আগ্রাসন’, ৭ শতাংশের বেশি; আর মাথাপিছু আয় ১৭৫১ ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭৮৯ টাকা।