আসসালামু আলাইকুম। তারুণ্যের অহংকার, যুবকদের আইডল, সুশিক্ষায় শিক্ষিত তরুণ ইসলামিক স্কলার মিজানুর রহমান আজহারী । ছোট-বড় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে । বর্তমানে অনেক ইসলামী চিন্তাবিদ রয়েছে তবে তার মধ্যে স্পেশাল মিজানুর রহমান আজহারী। আজ তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানব
কে এই মিজানুর রহমান আজহারী?
মিজানুর রহমান আজহারী ২৬শে জানুয়ারি ১৯৯০ সালে ঢাকা জেলার ডেমরা থানায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস কুমিল্লা জেলার মুরাদনগরের পরমতলা গ্রামে। মিজানুর রহমান আজহারি ঢাকাতে বেড়ে ওঠেন। তাঁর পিতা একজন মাদ্রাসা শিক্ষক ও মাতা গৃহিণী। ছোট বেলা থেকে তিনি মাদরাসায় পড়াশোনা করেন। পরে তিনি আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি পান। মিজানুর রহমান তার নাম। তবে মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার কারণে তার নামের সাথে ‘আজহারী’ উপাধি যুক্ত হয়েছে।
মিজানুর রহমান আজহারীর শিক্ষা জীবনঃ
২০০৪ সালে দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন এবং ২০০৬ সালে কামিল অর্থাৎ এইসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ ৫ সহ বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বার্ড এর টপ মেরিট লিস্টে জায়গা করে নেন। ২০০৭ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত মিশর সরকারের শিক্ষা বৃত্তি পরীক্ষায় তিনি হাজার হাজার কওমি ও আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্রদের মধ্যে বরাবরের মতো প্রথম স্থান অধিকার করে মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ডারগ্রাজুয়েট করার জন্য মিশরে গমন করেন। ২০১২ সালে ৮০ পার্সেন্ট সিজিপিএ নিয়ে অনার্স এ উত্তীর্ণ হন। মিশরে ৫ বছর শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করার পর তিনি গার্ডেন অফ নলেজ খ্যাত মালয়েশিয়ার ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে পোষ্ট-গ্রাজুয়েসোন ও এমফিল এবং পিএইসডি করার সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৩ সালে তিনি মালয়েশিয়া গমন করেন উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ কোরআন এন্ড সুন্নাহ স্টাডিজ থেকে তিনি ২০১৬ সালের মধ্যে পোস্ট-গ্রাজুয়েশন এবং এমফিল শেষ করেন। মাস্টার্স এ তার সিজিপিএ ছিল ৩.৮২ আউট অফ ৪ পয়েন্ট। এছাড়াও আইএলটিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ওভারঅল ৭.৫ আউট অফ ৯ ব্যান্ড স্কোর এবং স্পিকিং সেকশনেও ৭.৫ ব্যান্ড স্কোর অর্জন করেন।
মিজানুর রহমান আজহারীর কর্মজীবন:
মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী ২০১০ সালে ইসলামি গজল ও কিরাত দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। পরে তিনি এটিএন বাংলা টিভির একটি ইসলামি অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। ২০১৫ সালের শুরুর দিকে তিনি ওয়াজ-মাহফিল নিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। বৈশাখী টেলিভিশনে ‘ইসলাম ও সুন্দর জীবন’ শিরোনামের একটি অনুষ্ঠান করেছেন।মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী জীবনীঃ সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মধ্যে তার একটি ফেসবুক আইডি ও একটি অফিশিয়াল ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ রয়েছে। তার ব্যক্তিগত কোন ইউটিউব চ্যানেল নেই। তার মাসিক আয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তাফসির মাহফিলে তিনি চুক্তিবদ্ধ হন না। তাফসির মাহফিলে যেটুকু হাদিয়া পায় তাই তিনি নিয়ে থাকেন। বর্তমানে বছরের বেশিরভাগ সময় তিনি মালয়েশিয়াতে থাকেন। সেখানে পিএইসডি করছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি সময় পেলে তিনি তাফসির মাহফিল করে থাকেন। তাছাড়াও তিনি বৈশাখী টেলিভিশনে ইসলাম ও সুন্দর জীবন শিরোনামের একটি প্রোগ্রাম করেছেন।
মিজানুর রহমান আজহারীর দাম্পত্য জীবনঃ
মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী ২০১৪ সালের ২৯ শে জানুয়ারি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং তার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
জনপ্রিয়তা:
ইসলামের মধ্যে থেকেও নিজেকে যে স্মার্ট ভাবে উপস্থাপন করা যায় তা মিজানুর রহমান আজহারিকে দেখলেই বুঝতে পারবেন। বর্তমান সময়ের যুবকরা তাকে খুবই পছন্দ করে। তার তাফসির মাহফিলে যুবকদের গনস্রত দেখা যায়। তিনিও যুবকদের খুবই পছন্দ করেন এবং তাফসীর মাহফিলে তিনি যুবকদেরকে ভালো পথে চলার আহ্বান করেন। তিনি বিশ্বাস করেন, যুবকরা ভালো পথে চললে ও ইসলামের সাথে থাকলে এগিয়ে যাবে একটি দেশ, সুন্দর হবে একটি সমাজ। আল্লাহর রহমতে তিনি দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি আল্লাহ তাআলা তাকে দিয়েছেন সুমধুর কন্ঠস্বর। তিনি ২০১৯ সালে প্রায় ১৫ হাজার তাফসির-মাহফিলের দাওয়াত পেয়েছেন। তার আলোচনার কারণে তিনি এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। তাকে ইনভাইটেশন এর জন্য রীতিমতো সিডিউল নিতে হচ্ছে। তিনি বাংলা ভাষার পাশাপাশি আরবী ও ইংরেজি ভাষায় খুবই দক্ষ।
শেষ কথা:
আশা করি, এই পোস্ট আপনাদের সবার ভালো লাগবে। ভাল লাগলে অবশ্যই সবার মাঝে শেয়ার করবেন আর কিছু জানার থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন।আর যদি এই আর্টিকেলে কোন ভুল-ভ্রান্তি হয়ে থাকে তাহলে তা ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমি সব সময়ের জন্য চেষ্টা করি আপনাদের সামনে ভালো একটি আর্টিকেল পেস্ট করতে। এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। সবাই ভাল থাকবেন আল্লাহ হাফেজ………………