বিসমিল্লাহির রহমানের রাহিম আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজকে আপনাদের সামনে একটি নতুন বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আমাদের আজকের বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমরা আজকে অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ পদ্ধতি, ভূমি উন্নয়ন করের ফরম, হিসেব, হার ও সেবা সকল বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করব। তাই আপনি যদি এই বিষয় গুলো সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের আর্টিকেল টি মনোযোগ সহকারে দেখুন।জমির ওপর সরকার খাজনা কেন আদায় করে সেটা নিয়ে নানান মতবাদ থাকতে পারে। তবে জমির মালিকানা প্রমাণের বা জমিতে নিরঙ্কুশ ভোগ-দখলের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য প্রাচীনকাল থেকেই কৃষকরা জমির খাজনা দিয়ে আসছেন।
ভূমি উন্নয়ন কর বকেয়া হলে কী করবেন?
ভূমি উন্নয়ন কর বছর বছর পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু অনেকেরই ভূমি উন্নয়ন কর বকেয়া পড়ে থাকে। সঠিক ধারনা না থাকায় অনেকেই ভূমি উন্নয়ণ কর পরিশোধ করেন না। ফলে রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা দায়েরসহ অনেক সমস্যা হতে পারে। এমনকি জমির মালিকানা হারাতে হতে পারে। এক্ষেত্রে একটি ভুল ধারণা রয়েছে- তিনবছরের বেশি বকেয়া বাকী থাকলে তা আদায় করা যায়না। আসলে তা ঠিক নয়। বিধিমালা এবিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছে। তবে তিন বছরের মধ্যেই আদায়ের জন্য রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করতে হয়।
ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ে প্রচলিত পদ্ধতির ৬সীমাবদ্ধতা:
২। ভূমির মালিক অন্যত্র অবস্থান করার কারণে কর প্রদান করতে না পারা।
৩। ভূমি উন্নয়ন কর বাবদ দেওয়া অর্থের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় সাধারণ জনগণ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে তা পরিশোধে আগ্রহী হয় না।
৪। করের পরিমাণ তুলনামূলক কম হওয়ায় পরিশোধে যে সময় ও খরচ হয় তা বিবেচনা করে অনেকে কর পরিশোধে আগ্রহী হয় না।
৫। প্রচলিত নিয়মে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কর্তৃক সঠিক দাবি নির্ধারণপূর্বক ভূমি উন্নয়ন কর আদায় ও ব্যবস্থাপনা কষ্টসাধ্য বিষয় বলেও অনেকে কর দিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন এবং
৬। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব।
কৃষি জমির ক্ষেত্রে:
২৫বিঘা পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ। ২৫ বিঘার অধিক হতে ১০ একর পর্যন্তজমির জন্য প্রতি শতাংশ জমির জন্য ২ টাকা । চা/রাবার/ফল/ফুলের বাগানের ক্ষেত্রে চাবাগান, রাবার বাগান,আমবাগান অথবা ১ একরের উধ্বে কোনো জমিতে ফলের বাগানকিংবা ফুলের বাগান থাকলে জমির ক্ষেত্রে প্রতি শতাংশ জমির জন্য ১ টাকা ১০পয়সা।
অকৃষি জমির ক্ষেত্রে:
কৃষিজমি বাদে অন্যান্য সকল জমিই অকৃষি কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে সংরক্ষিতরাখলে তা অকৃষি জমি বলে গণ্য হবে। সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, বাজারের সকল জমিঅকৃষি জমি। তাতে কৃষি কাজ করা হলেও। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, গাজীপুর ওনারায়নগঞ্জ মহানগরীর মত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার আবাসিক জমির কর শতক প্রতি ৬০, বাণিজ্যিক ৩০০ টাকা এবং জেলা সদরের আবাসিক জমির কর শতক প্রতি ২০ টাকা, বাণিজ্যিক ৬০ টাকা এবং অন্যান্য সকল পৌর এলাকার আবাসিক জমির জন্য কর শতক প্রতি ২০ টাকা বাণিজ্যিক হার ৬০ টাকা।
হস্তচালিত তাঁত ঘরের ক্ষেত্রে:
কোনোতাঁত ঘর তাতীর নিজস্ব বসতবাড়ীর অভ্যন্তরে বা গৃহসংলগ্ন হলে এবং তাঁতেরসংখ্যা সর্বাধিক ৫টি হলে এবং তাঁতগুলি সম্পূর্ণ হস্তচালিত ও তাঁতীর নিজস্ববা পরিবার ভুক্ত সদস্যের শ্রমে চালিত হয়ে থাকলে হস্তচালিত তাঁত শিল্প যেজমির উপর অবস্থিত উক্ত জমির কর আবাসিক হারে হবে। মজুরীর ভিত্তিতে বাইরেরলোক নিয়োগ করলে অথবা শক্তিচালিত তাঁত ব্যবহার করলে বা তাঁতীর বসত বাড়ীর অংশবিশেষে বাণিজ্যিক কার্যক্রম থাকলে ঐ জমির জন্য ভূমি উন্নয়ন কর বাণিজ্যিকহারে দিতে হবে।
প্রতিকারের জন্য কোথায় যেতে হবে?
বর্তমানে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বা তহশিলদার ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করে থাকেন।আগেই বলা হয়েছে-এরা কোন অসৎঅর্জনের জন্য বেশি কর ধার্য করলে অথবাএতদসংক্রান্ত কোনো ব্যাপারে সমস্যা সৃষ্টি হলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এরসঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। দাবি সম্পর্কে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)অথবা জেলা প্রশাসক এর কাছে ১৫ দিনের মধ্যে আপত্তি দাখিল করতে হবে। জেলা প্রশাসকের আদেশে কোনো ব্যক্তি সন্তুষ্ট না হলে সেই আদেশের বিরুদ্ধে ৪৫দিনের মধ্যে বিভাগীয় কমিশনারের নিকট আপিল করা যাবে। বিভাগীয় কমিশনারেরআদেশে কোন ব্যক্তি সন্তুষ্ট না হলে সেই আদেশের বিরূদ্ধেও ১৫ দিনের মধ্যেভূমি আপিল বোর্ডের কাছে আপিল করা যাবে।