বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম
প্রিয় ভিউয়ার্স আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভাল আছেন ।আমিও ভাল আছি ।আজকে আমি আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস নিয়ে ।যারা বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস খুঁজছেন তাদেরকে আমার এই ওয়েবসাইটে স্বাগতম।আমি আজকে আপনাদের সাথেবিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস নিয়ে আলোচনা করব।আশা করছি আজকের এই আলোচনা আপনাদের সবার ভালো লাগবে।
শিশুশ্রম প্রতিরোধ নিয়ে কিছু কথা:
একটি শিশু হচ্ছে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আজকের একটি ছোট্ট শিশু কাল হতে পারে ডাক্তার ,ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক অথবা প্রধানমন্ত্রী। একটা ভালো পরিবারেই পারে একটি ছোট্ট শিশুকে জীবনের উন্নতির দিকে হাঁটতে। একটি পরিবার এইবারে একটি শিশুকে ভালো একটি জীবন উপহার দিতে। প্রতিটি পরিবারের মানুষের উচিত একটি শিশুকে জীবনের ভালো পথ গুলো দেখিয়ে দিতে যাতে করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মে এই শিশুটি কিছু করে দেখাতে পারে। কিন্তু বর্তমান সমাজের মানুষ তার উল্টোটা করে থাকে। একটি শিশুর হাতে কলম ধরিয়ে না দিয়ে দেয় কাজ করে খাওয়ার মত হাতিয়ার। বর্তমান সমাজের মানুষদের কারণেই দিন দিন বেড়ে চলেছে শিশুশ্রম। কখনো ভেবে দেখে না বা চিন্তা করে দেখতে চায় না শিশুটির জীবন শুরু হওয়ার আগেই অঝোরে ঝরে পড়তেছে। দরিদ্র পরিবারের সন্তানরা ঠিকমত খেতে না পারার কারণে তারা স্কুলে যেতে পারে না। লেখাপড়া করার বয়সে তারা অভাবের কারণেই লেখাপড়া বাদ দিতে বাধ্য হয়। হাতে কলম ছেড়ে তুলে নেয় কাজ করে খাওয়ার মত অস্ত্র। আর এ কারণেই দিন দিন বেড়ে চলেছে শিশু শ্রম। শিশুশ্রম হচ্ছে একটা অমানবিক শ্রম। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলওর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ঢাকার বাসাবাড়িতে প্রায় দেড় লাখ শিশু কাজ করে ।এই শিশুরা সাধারণত গ্রাম থেকে আসে কাজ করার জন্য। শহরের গৃহকর্মে নিয়োজিত হাওয়া শিশুদের নেই কোন দুরন্ত শৈশব। পড়া শুনা দুরের কথা অসুস্থ হলে চিকিৎসার হয়না এই শিশুদের। একারণে অকালেই অনেক শিশু মৃত্যুবরণ করে।আমাদের সকলের উচিত দারিদ্র পরিবারের শিশুদের কে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া। দারিদ্র পরিবারের শিশুদের পাশে দাঁড়ানো। তাদেরকে স্কুলে লেখাপড়ার ব্যবস্থা করে দেয়া। নিজের সন্তানের মতো দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের কে মনে করা।কোথাও শিশুশ্রম দেখলে তার প্রতিবাদ জানানো।
বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস:
প্রতিবছর ১২ই জুন বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করা হয়।১৯ বছর আগে এই দিবসের সূচনা করেছিল আন্তর্জাতিক শ্রম সংঘ। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা এবং ইউনিসেফ সহ বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা যৌথভাবে দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন সরকার শিশুশ্রম নিরসনে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিমগুলো অঙ্গীকারবদ্ধ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস পালনের উদ্যোগ কাউকে রাষ্ট্রপতি স্বাগত জানান। এবছর বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস এর প্রতিপাদ্য যথার্থ হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। রাষ্ট্রপতি বলেন জাতিসংঘ ২০২১ সালকে আন্তর্জাতিক শিশুশ্রম নিরসন বছর হিসেবে ঘোষণা করা এ বছরের বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উদযাপন বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। রাষ্ট্রপতি আবারো বলেন বাংলাদেশে এ বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেছে। তাই শিশুদের সার্বিক বিকাশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথাযথ কর্মসূচি গ্রহণ করার এখনই সময়। সরকার এসডিজি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন এবং ২০২৫ সালের মধ্যে দেশকে সব ধরনের শিশুশ্রম হতে মুক্তি করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। বাংলাদেশ জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ এবং ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম বিষয়ক আইএলও কনভেনশন অনুসরণকারী দেশ। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিষয়ক এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য শিশুশ্রম নিরসন কর্মসূচি হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। আব্দুল হামিদ আশাপ্রকাশ করেন সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় সব প্রতিষ্ঠানে কোন প্রতিষ্ঠানে খাতকে শিশুশ্রম মুক্ত করার মাধ্যমে বাংলাদেশকে শিশুশ্রমের অভিশাপ থেকে মুক্ত করা সম্ভব হবে। রাষ্ট্রপতি বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস এর সব সর্বশুচির সাফল্য কামনা করেন। বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন সরকারের পাশাপাশি শিশুশ্রম প্রতিরোধ এবং শিশুদের কল্যাণে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় আন্তর্জাতিক সংস্থা উন্নয়ন সহযোগী গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিভিল সোসাইটি ও গণমাধ্যম মালিক ও শ্রমিক সংগঠন সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরো কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য আমি আহ্বান জানাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারো বলেন দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তথা শিশুদের শিক্ষা নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রী নিয়ে আবারও বলেন শিশুশ্রম নিরসনের লক্ষ্যে জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি ২০১০ প্রণয়ন করা হয়েছে। এসডিজি এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ২০২৫ সালের মধ্যে দেশকে সবধরনের শিশুশ্রম থেকে মুক্তি করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারো বলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় শিশুশ্রম নিরসনের বিভাগীয় জেলা উপজেলা কমিটিগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে ।এ পর্যন্ত মোট আটটি খাতকে শিশুশ্রম মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ৩৮ ধরনের কাজ করে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে ।এ তালিকা হালনাগাদ করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে ।ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিযুক্ত শিশুদের প্রত্যাহার করে বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে।
শেষ কথা:
প্রিয় বন্ধুরা আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস বিস্তারিত আলোচনা করেছি ।আশা করি বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস সম্পর্কে পড়ে আপনাদের সবার ভালো লাগবে ।ভালো লাগলে অবশ্যই সবার মাঝে শেয়ার করবেন ।এবং কমেন্ট করে আমাদেরকে জানাতে ভুলবেন না ।সবাই ভাল থাকবেন ধন্যবাদ।