বিসমিল্লাহির রহমানের রাহিম প্রিয় ভিউয়ার্স আসসালামুআলাইকুম আশা করছি সবাই ভালো আছেন আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও ভাল আছি। আজকে আমি আপনাদের সামনে এটি মহা মূল্যবান বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। বিষয়টি হচ্ছে বঙ্গবন্ধু টানেল নিয়ে কিছু কথা ও বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের সময় ও উদ্বোধনের কারণ। কি কারনে বঙ্গবন্ধু টানেল তৈরি করা হয়েছে ছাব্বিশ সয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করব আপনারা যারা বঙ্গবন্ধু টানেল সম্বন্ধে জানার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছেন তারা তাড়াতাড়ি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ুন। প্রিয় বন্ধুরা নতুন তথ্য জানার জন্য নিয়মিত আমাদের এই পেজটি ভিজিট করুন এবং সকল তথ্য সংগ্রহ করুন তাই আর দেরি না করে মনোযোগ সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ুন এবং বঙ্গবন্ধু টানেল সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করুন।
সাড়ে চার বছরের নির্মাণযজ্ঞ শেষে খুলে দেওয়া হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। এই টানেল চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্ত করেছে। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সাগর উপকূল ঘিরে শিল্পের নতুন দুয়ার খুলে যাচ্ছে।
চার লেনের এই টানেল যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। টোল দিয়েই টানেল ব্যবহার করতে হবে। শুধু দেশেই প্রথম নয়, দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে প্রথম সড়ক টানেল এটি।
ঢাকা থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারগামী গাড়ি এখন চট্টগ্রাম শহরে না ঢুকে ফৌজদারহাটে টোল রোড এবং চট্টগ্রামের সাগরপাড়ে আউটার রিং রোড হয়ে সরাসরি টানেলের মাধ্যমে আনোয়ারায় চলে যাবে। একইভাবে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী গাড়ি একই পথে যেতে পারবে। এতে অন্তত ৪০ কিলোমিটার দূরত্ব কমবে।
বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, টানেলের মাধ্যমে সারা দেশের সঙ্গে দক্ষিণ চট্টগ্রাম–কক্সবাজারের যোগাযোগ আরও সহজ হলো। এখন দক্ষিণ চট্টগ্রামে পরিকল্পিতভাবে নতুন শহর ও নতুন নতুন শিল্প এলাকা গড়ে তোলা যাবে।
যেভাবে এগিয়েছে টানেল
২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী টানেল নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। তৎকালীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) এই প্রকল্প অনুমোদন পায়। এরপর ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং যৌথভাবে বঙ্গবন্ধু টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্মাণকাজ শুরু করে চীনের প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড। সাড়ে চার বছরের নির্মাণযজ্ঞ শেষে আজ উদ্বোধন হচ্ছে এই টানেল। টানেল নির্মাণে মূল প্রকল্প ব্যয় ছিল ৮ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা। দুই দফা প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকার দিয়েছে ৪ হাজার ৬১৯ কোটি টাকা। চীন সরকারের অর্থসহায়তা ছিল ৬ হাজার ৭০ কোটি টাকা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশে প্রথম টানেল নির্মাণ করতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে। দেশি–বিদেশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এবং সরকারের উচ্চপর্যায়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নির্দিষ্ট সময়ে নির্মাণকাজ শেষ করা সম্ভব হয়েছে।
দুয়ার খুলছে নতুন অর্থনৈতিক হাবের
শিল্পকারখানা চালুর জন্য গ্যাস ও বিদ্যুতের মতো সুবিধা দেওয়া যাবে এই অঞ্চলে, এ জন্য বাড়তি খুব বেশি বিনিয়োগ করতে হবে না। কারণ, আমদানি গ্যাসের পাইপলাইন নেওয়া হয়েছে এই অঞ্চল দিয়ে। চালু ও চালুর অপেক্ষায় থাকা আড়াই হাজার মেগাওয়াটের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রও রয়েছে এ অঞ্চলে। অর্থাৎ বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সব সুবিধা রয়েছে এই অঞ্চলে।
এই টানেল মূলত মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত সমুদ্র উপকূলের সঙ্গে আনোয়ারা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত উপকূলকে যুক্ত করেছে। এই উপকূলে মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের প্রকল্প নিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। বৈদেশিক ঋণসহায়তার জন্য প্রাথমিক উন্নয়ন প্রকল্প ছক তৈরি হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ১৭০ কিলোমিটার লম্বা মেরিন ড্রাইভ নির্মাণে সম্ভাব্য খরচ ধরা হয়েছে ৪২ হাজার কোটি টাকা।
উদ্যোক্তারা বলছেন, এই মেরিন ড্রাইভের পাশে গুচ্ছ গুচ্ছ শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা যাবে। শিল্পাঞ্চল গড়ার জন্য জমিরও সহজলভ্যতা রয়েছে। যেখানে খাসজমিই বেশি।
প্রিমিয়ার সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, এই অঞ্চলে শিল্পায়নে গতি আনবে টানেল। কারণ, কাছাকাছি বন্দর–সুবিধা থাকায় ব্যবসার খরচ কমবে। আবার সুপরিকল্পিতভাবে শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা যাবে।
অর্থনীতিবিদ ও ইউজিসির সাবেক অধ্যাপক মইনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এই টানেল দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের সাগর উপকূল ধরে বিশাল এলাকা শিল্পায়ন, নগরায়ণ ও পর্যটনের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এই সুবিধা নিতে হলে মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সাগর উপকূল ধরে মেরিন ড্রাইভ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। আবার বাংলাদেশ–চীন–ভারত–মিয়ানমার অর্থাৎ বিসিআইএম অর্থনৈতিক করিডরের সড়ক নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এই টানেল। বিসিআইএম কার্যকর হলে সত্যিকার অর্থে আগামী দিনে অর্থনৈতিক হাবে পরিণত হতে পারে এ অঞ্চল।