দাড়ি ইসলামে একটি মানুষের বালের একটি রূপ বোধ করায়। ইসলামে দাড়ি একটি সুন্নত মুয়াম্মাদি (সাঃ) ধরনের হিসাবে বিবেচিত হয়। সুন্নত মুয়াম্মাদি অনুযায়ী, আল্লাহ তাআলা নবী মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর উপর বরখাস্ত দাড়িতে আদেশ দেন এবং তিনি সেই দাড়ি ধরতেন। ইসলামে দাড়ির একটি গুরুত্বপূর্ণ মান্যতা হলো প্রতিষ্ঠিত সুন্নত এবং প্রচলিত মানসিকতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অহমিয়তা রাখা। দাড়ি মাথার একটি আংটিতের মতো হলেও এটি মুখে প্রতীক্ষার ব্যাপার নয়, বরং এটি একটি আন্তরিক ব্যক্তিগত উপস্থিতি সূচন করে যা মুসলিম মানুষের দ্বীনি মহাজান এবং তার সংগঠনিক সংলগ্ন কার্যক্রমগুলিতে প্রতীক্ষা করে। দাড়ি একটি ইসলামী আইদের চিহ্ন হিসাবে ওযু এবং নামায় সময় থেকে আদেশ করে। এই দাড়ি নিয়ে বিখ্যাত ব্যক্তিরা অনেক উক্তি বলে গেছেন। তাই আজকের এই পোস্টে দাড়ি নিয়ে কিছু উক্তি তুলে ধরব আপনাদের সামনে।
দাড়ির আরবি প্রতিশব্দ হচ্ছে লিহইয়াহ। এই শব্দটি ‘লাহি’ বা চোয়াল থেকে আগত। চোয়াল তথা গালে গজানো চুলকেই মূলত দাড়ি বলা হয়। নিচের ঠোঁটের নিচে, চিবুকে ও চোয়ালের নিচের অংশে উৎপন্ন চুলও এর অন্তর্ভুক্ত। দাড়ি পুরুষদের মুখমন্ডলের একটি গুরুত্ত্বপূর্ণ অংশ। গুরুত্ত্বপূর্ণ বলার কারণ হচ্ছে দাড়ি রাখা বা না রাখার ইসলামিক ও বৈজ্ঞানিক উপকারী ও ক্ষতিকর উভয় দিক রয়েছে। যা আজ আমরা আমাদের আলোচনায় তুলে ধরবো।পুরুষদের মুখমন্ডলে দাড়ি রাখা মুসলিমদের এক গুরুত্বপূর্ণ চিন্হ যা তার মুসলমান হওয়ার পরিচয় বহন করে। দাড়ি রাখা ফরজ, ওয়াজিব নাকি শুধুই সুন্নত তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) তার জীবনে যা করতেন অর্থাৎ তার কর্মপন্থাই মূলত সুন্নত হিসেবে পরিগণিত। সেই দিক থেকে দাড়ি রাখা অবশ্যই সুন্নাত এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
সাহাবী কাইস ইবন সা‘দ রাদিয়াল্লাহু আনহুর দাড়ি উঠে নি। তার কাওম আনসাররা বলতো: “বীরত্ব ও সাহসিকতায় কতইনা সেরা মানুষ হলেন আমাদের নেতা কাইস ইবন সা‘দ; কিন্তু কষ্টের বিষয় হলো, তার কোনো দাড়ি নেই। দিরহাম দিয়ে যদি দাড়ি কেনা যেতো, তাহলে আমরা তার জন্য দাড়ি কিনতাম!!”তদ্রূপ তাবে‘ঈ আহনাফ ইবন কায়েসেরও কোনো দাড়ি ছিল না, তিনিও তার গোত্রের নেতা ছিলেন। তার গোত্রের লোকেরা বলতেন: দাড়ি কিনতে ২০ হাজার দিরহাম লাগলেও, তা দিয়ে তার জন্য দাড়ি কিনতাম।” এটা এ জন্য যে, দাড়ি তাদের নিকট সৌন্দয্য ও পুরুষত্ব এবং পরিপূর্ণ ব্যক্তিত্বের প্রতীক ছিল। তাদের গর্দান চলে যাক কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু দাড়ি যেন চলে না যায়, এ ব্যাপারে তারা আপোস করতেন না। আল্লাহ তা‘আলাই বেশি জানেন যে, পুরুষের জন্য কোনটি বেশি উপযোগী? তিনি পুরুষের জন্য দাড়ি চয়েস করেছেন, তাই এর দ্বারা তাকে সজ্জিত করেছেন। আল্লাহ যা চয়েস করেছেন, কোনো জ্ঞানী ব্যক্তি কি সেটাকে অপছন্দ করতে পারে? কখনই না। আল্লাহ বেশি জানেন, নাকি বান্দা বেশি জানেন? কারণ, মানুষের জ্ঞানের পরিধি সীমাবদ্ধ। আল্লাহ তা‘আলা তাই বলেন।
দাড়ি নিয়ে ইসলামিক উক্তি
- নিজের দাড়িকে ভালবাসুন এবং এটি আপনাকেও ভালবাসবে। – জিন ককটেউ
- পুরুষের দাড়ি সেভ করা একজন মহিলার মাথা সেভ করার মতোই। – ইবনে তাইমিয়্যাহ
- তোমরা গোঁফ অনেক ছোট করবে এবং দাড়ি ছেড়ে দেবে। – হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
- দাড়ি মানুষকে পূণ্যবান ও শোকরগুজার বান্দায় পরিণতি করে। – সংগৃহীত
- দাড়ি বাড়ানো কঠিন এবং যতটা সহজ মনে হয় ততটা সহজ নয়। – গৌতম রোডে
- একজন পুরুষকে তার দাড়ির যত্ন নিতে হবে যেভাবে মহিলারা তাদের চুলের যত্ন নেয়। – সংগৃহীত
- দাড়ি মুন্ডন করা হারাম, এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত দাড়ি কর্তন করা মাকরুহ নয়। – মানসূর বুহুতী রঃ
- তোমরা গোঁফ ছোট কর এবং দাড়ি বাড়াও। – হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
- কিয়ামতের অন্ধকারে মুমিনের দাড়ি নূরে পরিণত হবে। – সংগৃহীত
- দাড়ি ছাড়া পুরুষ কেশর বা লোম ছাড়া সিংহের মতো। – সংগৃহীত