বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভাল আছেন আমিও ভাল আছি আজকে আমি আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে যা আপনাদের ত্বকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।ত্বকের সৌন্দর্য ভালো রাখার জন্য সিরাম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সিরাম ব্যবহার করলে মুখে ব্রণ ফুসকুড়ি হয়না। সিরাম ব্যবহার করলে ত্বকের কোঁচকানো ভাব থাকে না।তবে অনেকের সিরাম সম্পর্কে ধারণা না থাকার কারণে ভাবেন সিরাম মানেই বাড়তি খরচ। ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য ফেসওয়াশ-ক্রিম ব্যবহারই যথেষ্ট। যদি আপনিও মনে মনে এমন ধারণা পোষণ করেন, তবে জেনে নিন, কীভাবে সিরামই ম্যাজিকের মতো কাজ করতে পারে আপনার ত্বকে-
সিরাম কি ?
এখন আমরা আপনাদের সিরাম সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব।সিরাম হচ্ছে এক ধরনের স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট যা ত্বক পরিস্কার করার পর এবং ময়েশ্চারাইজ়ার ব্যবহার করার পূর্বে ত্বকে ব্যবহার করতে হয়। সিরাম তৈরি হয় খুব ছোট ছোট মলিকলস দ্বারা যা ত্বক বা চুলে সহজেই মিশে যেতে পারে। মলিকলস শক্তিশালী উপাদান দ্বারা তৈরি হয় যা কার্যকরী ভাবে কাজ করে। যার ফলে এটা স্কিন কেয়ারের বিভিন্ন বিষয় যেমন ত্বকের বলিরেখা, বয়সের ছাপ ইত্যাদির ক্ষেত্রে খুব ভাল কাজ করে। আপনি যদি মনে করেন আপনার বর্তমান স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট আপনার ত্বককে সজীব ও প্রানউজ্জল করতে পারছেনা তখনিই আপনি সিরাম ব্যবহার করতে পারেন। সিরাম ব্যবহার করতে হয় ত্বক পরিস্কার করার পর যখন ত্বকে ভেজা ভাব থাকে তখন। সিরাম ব্যবহার করতে হয় খুব অল্প পরিমাণ। পাঁচ ফোটার বেশী না। ত্বকে সিরাম ব্যবহারের ফলাফল বেশীরভাগ সময় সাথে সাথেই পাওয়া যায়। এটা দিনে একবার ব্যবহার করলেই চলে।
ভিটামিন সি সিরাম তৈরি করার উপায়:
ভিটামিন সি সিরাম ব্যবহার করে ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে পারেন।তবে সব প্রসাধনী তো আর আসল নয়। কারণ নকলের ভিড়ে এখন আসল সব প্রসাধনী খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। তাই প্রাকৃতিক উপায়েই চাইলে ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন ভিটামিন সি সিরাম।সামান্য কয়েকটি উপকরণ দিয়ে বাড়িতেই বানিয়ে ফেলতে পারেন এই সিরামটি।
প্রয়োজনীয় উপকরণ: বাড়িতে ভিটামিন সি তৈরি করতে আপনার প্রয়োজন হবে ১টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল, ১ চা চামচ গ্লিসারিন, ২ চামচ গোলাপ জল ও ১/৪ আই অ্যাসকর্বিক অ্যাসিড পাউডার। আই অ্যাসকর্বিক অ্যাসিড পাউডার না থাকলে ভিটামিন সি ট্যাবলেটও গুঁড়ো করে নিতে পারেন।
যেভাবে তৈরি করবেন: একটি ড্রপার যুক্ত কাচের শিশি নিন। ভিটামিন সি এর গুঁড়ো আগে ঢেলে দিন। এরপর তার মধ্যেই গোলাপ জল মিশিয়ে নিন। ভিটামিন ই ক্যাপসুল ফুটো করে বের করে ঢেলে দিন মিশ্রণে। এরপর গ্লিসারিন মিশিয়ে দেবেন। ভালো করে ঝাঁকিয়ে নিতে হবে সব উপকরণ। অবশ্যই এয়ারটাইট বোতলে এটি সংরক্ষণ করুন।
যেভাবে ব্যবহার করবেন: প্রথমে মুখ পরিষ্কার করে ধুয়ে নেন। তারপর টোনার লাগিয়ে ভিটামিন সি যুক্ত ফেস সিরাম ব্যবহার করুন। এরপর ময়েশ্চারাইজার বা নাইট ক্রিম লাগিয়ে নিতে পারেন। প্রথমবার ব্যবহারে ত্বকে সামান্য জ্বালা করতে পারে। তাই সপ্তাহে দুইদিন এটি ব্যবহার করুন। তবে ব্যবহারের আগে অবশ্যই হাতে বা কানের পেছনে স্কিন টেস্ট করে নিতে ভুলবেন না।
এটি অবশ্যই রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করুন। সকালে ঘুম থেকে উঠেই তা ধুয়ে ফেলতে ভুলবেন না। নিয়মিত এই সিরাম ব্যবহার শুরু করলে বাইরে বের হওয়ার সময় অবশ্যই সানস্ক্রিন ক্রিম লাগানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন স্কিন বিশেষজ্ঞরা।
কীভাবে ব্যবহার করবেন সিরাম ?
ত্বককে টানটান ও উজ্জ্বল করে ভিটামিন সি।ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন সি সিরামের গুণাগুণকে বলে শেষ করা যাবে না। ত্বককে টানটান ও উজ্জ্বল করার পাশাপাশি ত্বকের বলিরেখাসহ সব ধরনের কালচে দাগও দূর করে এ উপাদানটি।কোনও উপাদানকে ত্বকের গভীরে সহজেই পৌঁছে দিতে ব্যবহার করা হয় সিরাম। সরাসরি ত্বকে কাজ করে বলে সিরাম ব্যবহারের ফল হয় দারুন। বিশেষত, দাগছোপ, বলিরেখা, কোঁটকানোভাব বা শুষ্কতা ইত্যাদির মোকাবিলা করে সিরাম। তাই, ত্বক পরিষ্কার করার পর এবং ময়েশ্চারাইজ়ার লাগানোর আগে সিরাম ব্যবহার করা উচিত। সিরাম লাগিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। তাহলে, ত্বক তাড়াতাড়ি শুষে নেবে সিরাম। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তবেই অন্য প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন। সাধারণত, দিনে দু’বার ব্যবহার করা উচিত সিরাম।
সিরামের গুণাগুণ:
- ব্যবহার করতে বেশি সময় লাগে না।
- তাড়াতাড়ি কাজ করতে শুরু করে।
- ত্বকের গভীরে গিয়ে আর্দ্রতা জোগায়।
- সহজে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।
- ত্বককে সারিয়ে তোলার কাজ শুরু করে
সঠিক সিরাম কীভাবে বাছাই করবেন ?
বর্তমানে ভিটামিন সি আছে এমন সব প্রসাধনী সামগ্রীর কদর বেড়েছে। বিশেষ করে ভিটামিন সি সিরাম, সব নারীরাই দৈনন্দিন ব্যবহার করে থাকেন।প্রতিটি সিরামই কার্যকরি উপাদানে পরিপূর্ণ থাকে। এক এক ধরনের ত্বকের জন্য এক একরকম সিরাম পাওয়া যায়। তাই প্রথমেই সিরামের বোতলের পিছনে লেখা থেকে জেনে নিন, তাতে কোন্ কোন্ উপাদান আছে। আর কেনার আগে ত্বকের যে কোনও অংশে অল্প সিরাম লাগিয়ে পরীক্ষা করে নিন, কোনওরকম সমস্যা হচ্ছে কি না। আপনার ত্বকের জন্য কোন সিরাম উপযুক্ত, তা বোঝার জন্য রইল কিছু টিপস-
- ব্রণ-ফুসকুড়ি বেশি হয় এমন ত্বকের জন্য বেছে নিন, ভিটামিন-C, জ়িঙ্ক, স্যালিসিলিক অ্যাসিড ও রেটিনলযুক্ত সিরাম। জ়িঙ্ক ত্বকের জ্বালাভাব ও অস্বস্তি দূর করে। রেটিনল ফোলাভাব কমায়। স্যালিসিলিক অ্যাসিড রোমকূপ পরিষ্কার করে। ভিটামিন-C ত্বকে তেল উৎপাদন প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।
- নিষ্প্রাণ ত্বকের জন্য বেছে নিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত সিরাম। গ্রিন-টি এক্সট্র্যাক্ট রয়েছে এমন সিরাম ব্যবহার করলে ত্বক ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত।
- ত্বকের কোঁচকানোভাব কম করতে পেপটাইডসমৃদ্ধ সিরাম বাছা উচিত। এরফলে, কোলাজেন ও ইলাস্টিন উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং ত্বক হয়ে ওঠে টানটান।
- শুষ্ক ত্বকের জন্য বেছে নিন, ভিটামিন-E, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ও হাইড্রোলিক অ্যাসিডযুক্ত সিরাম। এর উপাদানগুলি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ় করে, এক্সফোলিয়েট করে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়িয়ে ত্বককে করে তোলে কোমল।
ক্রিম এবং সিরামগুলিতে ভিটামিন সি যুক্ত করবেন কেন ?
আমাদের মুখের ইতিমধ্যে বিদ্যমান বার্ধক্যের লক্ষণগুলি হ্রাস করে এবং আমাদের মুখের আলোকিতত্ব উন্নত করে, ক্লান্তিকে স্থিতি থেকে রোধ করে। ভিটামিন সি রয়েছে এমন দুর্দান্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শক্তির সাথে এই সমস্ত সুবিধাগুলির অনেক কিছুই রয়েছে , আমরা যদি খুব ভালভাবেই জানি যে এটি আমাদের ডায়েটে একটি প্রয়োজনীয় ভিটামিন, তবে এটি আমাদের ত্বকের জন্যও।ভিটামিন সি ফ্রি র্যাডিকেল, রেঙ্কুলগুলি রিঙ্কেলের উপস্থিতির জন্য দায়ী হিসাবে লড়াই করার পক্ষে সক্ষম। তদ্ব্যতীত , এটি কোষের পুনর্জন্মকে ত্বরান্বিত করে , তাই এটি আমাদের ত্বকের পুনর্নবীকরণের চেহারা দেয়, বয়স এবং অসম স্বরের লক্ষণগুলি সংশোধন করে এবং দাগগুলির চেহারা উন্নত করে। ভিটামিন সি আমাদের কোষ এবং আমাদের ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় কোলাজেন তৈরিতে উত্সাহ দেয়।আদর্শ হ’ল ভিটামিন সি আমাদের প্রসাধনীগুলিতে এর খাঁটি সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত করা, যা অ্যাসকরবিক অ্যাসিড । প্রস্তাবিত ঘনত্ব 5% থেকে 20% পর্যন্ত হয়, যেহেতু উচ্চ ঘনত্ব সবচেয়ে সংবেদনশীল ত্বকে জ্বালা হতে পারে।
পরিশেষে বলা যায়ভিটামিন সি সিরাম আমাদের শরীরের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ।ভিটামিন সি সিরাম ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। খসখসে ভাব দূর করে মানুষ কেবল সৌন্দর্যের অধিকারী হতে চায়। তাই সবাইকে নিয়মিত ভিটামিন সি সিরাম ব্যবহার করতে হবে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আজকের এই পোষ্ট আপনাদের সবার ভালো লাগবে। ভাল লাগলে অবশ্যই সবার মাঝে শেয়ার করবেন ।আর আপনারা যদি এই পোস্টের মাধ্যমে ত্বকের জন্য বিভিন্ন তথ্য জানতে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন ।এবং আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।