বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম প্রিয় ভিউয়ার্স আসসালামুআলাইকুম আশা করি সবাই ভাল আছেন আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও ভাল আছি আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি মূল্যবান আলোচনা করব। জেল হত্যার কথা মনে পড়লে গা শিউরে ওঠে। জেল হত্যা আসলে একটি রহস্যজনক ঘটনা আপনারা যারা এই জেল হত্যার ঘটনাটি জানেন না তাদের জন্য আজকের এই আপনার আর্টিকেল আপনাদের সুবিধার জন্য আজকের এই আর্টিকেলে জেল হত্যা দিবসের কথা নিখুঁতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। তাই আপনারা দেরি না করে মনোযোগ সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পোণ এবং যেন হত্যা দিবসের সকল ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান লাভ করুন।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে একটি পিকআপ এসে থামে।
সে সময় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জেলার হিসেবে কর্মরত ছিলেন আমিনুর রহমান।রাত দেড়টার দিকে কারা মহাপরিদর্শক টেলিফোন করে জেলার মি. রহমানকে তাৎক্ষনিকভাবে আসতে বলেন।দ্রুত কারাগারের মূল ফটকে গিয়ে মি. রহমান দেখলেন, একটি পিকআপে কয়েকজন সেনা সদস্য সশস্ত্র অবস্থায় আছে।মূল ফটকের সামনে সেনা সদস্যরা কারা মহাপরিদর্শককে একটি কাগজ দিলেন।সেখানে কী লেখা ছিল সেটি অবশ্য জানতে পারেননি মি. রহমান।মূল ফটক দিয়ে ঢুকে বাম দিকেই ছিল জেলার আমিনুর রহমানের কক্ষ। তখন সেখানকার টেলিফোনটি বেজে উঠে।মি. রহমান যখন টেলিফোনের রিসিভারটি তুললেন, তখন অপর প্রান্ত থেকে বলা হলো প্রেসিডেন্ট কথা বলবেন।
মি. রহমানের বর্ণনা করেন, “তাজউদ্দীন সাহেব তখন কোরআন শরীফ পড়ছিলেন। ওনারা কেউ আমাদের জিজ্ঞেস করলেন না আমাদের কোথায় নেও (নেয়া হচ্ছে)? সৈয়দ নজরুল ইসলাম সাহেব হাত-মুখ ধুলেন। আমি বললাম আর্মি আসছে।”চারজনকে যখন একটি কক্ষে একত্রিত করার ক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগার কারণে সেনাসদস্যরা কারা কর্মকর্তাদের নোংরা ভাষায় গালিগালাজ করছিল, বলছিলেন মি. রহমান।মনসুর আলি সাহেব বসা ছিল সর্ব দক্ষিণে। যতদূর আমার মনে পড়ে। আমি মনসুর আলীর ‘ম’ কথাটা উচ্চারণ করতে পারি নাই, সঙ্গে সঙ্গে গুলি,” বলেন মি. রহমান।কারাগারের ভেতর এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের খবর চার নেতার পরিবার সেদিন জানতে পারেননি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবর রহমানকে প্রায় সপরিবারে হত্যার ঘটনার সাথে জেল হত্যাকাণ্ডের যোগসূত্র আছে বলে মনে করা হয়।
তখন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে লে. কর্নেল হিসেবে কর্মরত ছিলেন আমিন আহমেদ চৌধুরী, যিনি পরবর্তীতে মেজর জেনারেল হয়েছিলেন। কয়েক বছর আগে মারা গেছেন মি. চৌধুরী।
২০১০ সালে তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, তখন সেনাবাহিনীতে নেতৃত্ব নিয়ে টানাপোড়েনের পরিণতি ছিল জেলখানার হত্যাকাণ্ড।
১৫ই আগস্টের অভ্যুত্থানের বিপরীতে পাল্টা আরেকটি অভ্যুত্থান হয়েছিল তেসরা নভেম্বর।
সেটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তৎকালীন ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফ।
আমিন আহমেদ চৌধুরীর মতে, তেসরা নভেম্বরের অভ্যুত্থানটি ছিল অনিবার্য।
কারণ শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছয়জন জুনিয়র সেনা কর্মকর্তা তখন বঙ্গভবনে বসে রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাককে পরিচালনা করছিলেন।
শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছয়জন জুনিয়র সামরিক কর্মকর্তাকে সেনাবাহিনীর চেইন অব কমাণ্ডের আওতায় আনার জন্য তেসরা নভেম্বর খালেদ মোশারফের নেতৃত্ব অভ্যুত্থান হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন জেনারেল চৌধুরী।
তাছাড়া শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডকেও তাঁরা মেনে নিতে পারছিলেন না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
কিন্তু খালেদ মোশারফের নেতৃত্বে সে অভ্যুত্থান সেনাবাহিনীর ভেতরে আবারো চেইন অব কমাণ্ড ভাঙার সম্ভাবনা তৈরি করেছিল বলে মনে করেন জেনারেল চৌধুরী।
খালেদ মোশারফের অনুগত সৈন্যরা বন্দি করে সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে।
ব্রিগেডিয়ার হোসেন বলেন, বঙ্গভবনের থাকা সেনা কর্মকর্তাদের সাথে একটা সংঘাত চলছিল সেনানিবাসের উর্ধ্বতন কিছু সেনা কর্মকর্তাদের সাথে।
“খন্দকার মোশতাক যে বেশিদিন ওখানে টিকবেন না, এটাও ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে সিনিয়র অফিসারদের মধ্যে একটা ধারণা জন্মেছিল। তখন আবার সিনিয়র অফিসারদের মধ্যেও ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ছিল,” বলছিলেন ব্রিগেডিয়ার হোসেন।
শেখ মুজিবকে হত্যাকারী সেনা কর্মকর্তারা ধারনা করেছিলেন যে কোন পাল্টা অভ্যুত্থান হলে সেটি আওয়ামী লীগের সমর্থন পাবে। সে ধরনের পরিস্থিতি হলে কী করতে হবে সে বিষয়ে মুজিব হত্যাকারী সেনা কর্মকর্তারা কিছুটা ভেবেও রেখেছিলেন।
তিনি বলেন, “ঐ ধরনের ক্যু হলে তখনকার আওয়ামী লীগে যাতে কোন ধরনের লিডারশিপ না থাকে সেটাই তারা বোধ হয় নিশ্চিত করেছিল।”
হত্যাকারী সেনা কর্মকর্তারা ভেবেছিল যদি সে চারজন রাজনীতিবিদকে যদি হত্যা করা হয় তাহলে পাল্টা অভ্যুত্থান হলেও সেটি রাজনৈতিক সমর্থন পাবে না।