প্রিয় ভিউয়ার্স আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভাল আছেন ।আমিও ভাল আছি ।আজকে আমি আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি গরুর খামারিদের যে তথ্যগুলো অবশ্যই জেনে রাখতে হবে তা আমাদের মধ্যে অনেকেরই জানা নেই। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের মাংস ও দুধের চাহিদা পূরণ করার জন্য প্রচুর পরিমাণ গরুর খামার গড়ে উঠেছে। তবে সঠিক তথ্য না জেনে খামার পরিচালনা করার কারণে খামারে অনেকেই লোকসান করে থাকেন। আজকে চলুন জেনে নেই গরুর খামারিদের যে তথ্যগুলো অবশ্যই জেনে রাখতে হবে সেই সম্পর্কে
গরু গৃহপালিত “রোমন্থক” প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত প্রাণী। এরা বোভিডি পরিবারের বোভিনি উপপরিবারের অন্তর্গত প্রাণী, যারা বস গণের বহুবিস্তৃত প্রজাতি। দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, মাংস (গোমাংস এবং বাছুরের মাংস) ও চামড়ার জন্য, এবং কৃষিকাজ ও গাড়ি টানার কাজে গরু ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য পণ্যের মধ্যে চামড়া এবং সার বা জ্বালানীর জন্য গোবর অন্তর্ভুক্ত। ভারতের কিছু অঞ্চলে ধর্মীয় কারণে গরুকে গুরুত্ব ও মর্যাদা দেওয়া হয়ে থাকে। ১০,৫০০ বছর পূর্বে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে ৮০টি বিভিন্ন বংশের গৃহপালিত পূর্বপুরুষ হিসেবে,[১] ২০১১ সালের অনুমান অনুযায়ী সারা বিশ্বে প্রায় ১৩০ কোটি গরু রয়েছে।[২] ২০০৯ সালে, গরু প্রথম প্রাণীসম্পদ প্রাণী যাদের সম্পূর্ণরূপে চিহ্ণিত জিনোম রয়েছে।[৩] কেউ কেউ গরুকে ধনসম্পদের প্রাচীনতম গঠন বিবেচনা করেন। অতি প্রাচীন কালে মানুষ যখন সভ্যতার ছোঁয়া পায়নি তখন গরু ছিল অতি প্রয়োজনীয় প্রাণী। বর্তমান সময়েও গরু একটি অপরিহার্য প্রাণী হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। গরু ছাড়া সাধারণ মানুষের কথা কল্পনা করা যায়না।-
খামারের স্থান নির্বাচনঃ
খামারের ১০টি গরুর জন্য ৩০০ বর্গ ফুট জায়গার প্রয়োজন হবে। গরুর ঘর থেকে ২০ থেকে ২৫ ফুট দূরে একটি ছোট ডোবা থাকবে যাতে সেখানে গরুর মল-মূত্র ফেলা যায়। এছাড়াও মল মুত্র থেকে জৈব সার ও বায়ো গ্যাস উৎপাদনের জন্য বায়ো গ্যাস প্লান্ট স্থাপন করে খামারের বর্জ ব্যবস্থাপনা করা যায়।
গাভীর খাদ্যঃ
কাঁচা ঘাস গবাদিপশুর প্রধান খাদ্য। এ ছাড়াও চালের কুড়া, গমের ভুষি, খেসারি ভুষি, ভুট্টা ভাঙ্গা, মুশুর, মুগ, মটরের ভুষি তিলের খৈল, তিষির খৈল, ধানের খড়, ভুট্টার খড় ইত্যাদি গাভীর খাদ্য হিসাবে ব্যাবহার করা হয়। এছাড়াও গাভীকে আঁশ ও দানাদার খাদ্য প্রদান করতে হবে।
গাভীর শেড নির্মাণঃ
খামারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক গাভীর জন্য শেড নির্মান করতে হবে। গাভীর শেড পূর্ব – পশ্চিমে লম্বা হলে ভাল হয়। উপরে টিন অথবা ছনের ছাউনি দেওয়া যেতে পারে। শেডের নিকটস্থ গাছ ও ডালপালা কেটে ফেলে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে। শেডে পানীয় জলের সরবরাহ ও পয়ঃ নিস্কাশনের ব্যাবস্থা থাকতে হবে।
গরুর খামারিদের যে তথ্যগুলো অবশ্যই জেনে রাখতে হবেঃ
১। গরুর খাবার পাত্র ও পানির পাত্র আলাদা রাখতে হবে। খামারে গরুর পানির পাত্রে কোনভাবেই যাতে খাদ্য এসে না পড়ে সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। গরুর খাবার পাত্র এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যাতে কোন খাদ্য বাইরে না পড়ে।
২। গরুর পানি খাওয়ার পাত্রটিতে সবসময় পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ পানি রাখতে হবে। গরুকে খাওয়ানোর পানিতে যদি কোন প্রকার জীবাণু থাকে তাহলে এর মাধ্যমে গরু আক্রান্ত হতে পারে।
৩। গরুকে কোন দানাদার খাদ্য প্রদান করলে তা অল্প পরিমাণ পানিতে মিশিয়ে গরুকে খাওয়াতে হবে। এতে করে গরু সহজেই সেই খাদ্য খেতে পারে এবং তা হজমেও সহায়তা করে থাকে।
৪। খামারের গাভী গর্ভবতী হলে গর্ভধারণ করার ৬ মাস থেকে বাচ্চা প্রসব করার আগ পর্যন্ত লবন খাওয়ানো যাবে না। এতে গাভীর গর্ভের বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে।
৫। নতুন করে বীজ দেওয়া গাভীকে গর্ভবতী কোন গাভীর আশপাশে রাখা যাবে না। এতে করে নতুন বীজ দেওয়া গাভীর বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে হবে।
৬। খামারের গরুগুলোকে নিয়মিত কৃমিনাশক ও ভেকসিন প্রদান করতে হবে। তাহলে গরুগুলো বেশি উৎপাদনক্ষম হয়ে উঠবে এবং খামারের আয় আরও বৃদ্ধি পাবে।
৭। খামারে প্রয়োজন ছাড়া বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ করে দিতে হবে। এটি করা না হলে খামারে বহিরাগতদের মাধ্যমে মারাত্মক রোগের আক্রমন ঘটতে পারে।
৮। খামারের খরচসহ সকল ধরণের আয় ও ব্যয়ের হিসাব রাখতে হবে। প্রয়োজন হলে খামারের জন্য আলাদা একটি রেকর্ড ফাইল তৈরি করে নিতে হবে।