হ্যালো বন্ধুরা আজকে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট নিয়ে এবার পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সবাই জানতে পারবেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল কিভাবে ফুটপাত থেকে উঠিয়া ক্রিকেট জগতের বাদশা হয়ে গেলেন।ক্রিস গেইলের জীবনী থেকে বোঝা যায় চেষ্টা আর কর্মের দ্বারাই মানুষ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারেন। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান হয়েও ক্রিস গেইল আজ ক্রিকেট জগতের একজন মহাতারকা। একনামে সবাই যাকে চেনেন তিনি হচ্ছেন ক্রিস গেইল। কর্মের দ্বারাই আজ ক্রিম গেইল মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। সত্যি ক্রিস গেইল একজন অসাধারণ ব্যক্তি। ক্রিকেট জগতে যার কোন তুলনা হয় না।তো চলুন বন্ধুরা আর কথা না বাড়িয়ে এখন শুরু করা যাক ক্রিকেট জগতের বিশেষ ব্যক্তি ক্রিস গেইলের জীবনের অজানা সব তথ্য।
১৯৭৯ সালের ২১শে সেপ্টেম্বর জ্যামাইকার কিংস্টনের এক বস্তিতে বসবাসকারী হতদরিদ্র পরিবারে ক্রিসট্রপার হেনরি গেইলের জন্ম। যাঁকে আমরা চিনি ক্রিস গেইল নামে। ৬ ভাইবোনের মধ্যে গেইল তাঁর বাবা-মার পঞ্চম সন্তান। বাবা ডুডলি গেইল পেশায় একজন পুলিশ ছিলেন। কিন্তু তিনি খুব কম পরিমাণ বেতন পেতেন। এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যারিস্টার, ক্রিকেটার কিংবা ফুটবলার, আরো অনেক স্বপ্ন। ছোট বেলার সেই দেখা স্বপ্ন পূরণ হয়ে ক’জনের? কেউ স্বপ্নকে ছুঁয়ে দেখেন, কেউ আবার সারা জীবন বয়ে বেড়ান স্বপ্নকে না ছুঁতে পারার আক্ষেপ। অনেকে আবার অজান্তেই হয়ে যান অন্য কিছু, যা তাকে দেয় অপার আনন্দ। ক্রিকেট বিশ্বে এমন কিছু ক্রিকেটার আছেন, যাদের শুরুটা অন্য পেশায়। কিন্তু পরে হয়ে উঠেছেন ক্রিকেটের মহাতারকা।
ছোটবেলা:
ছোটবেলা থেকেই ক্রিস গেলের বুকের একটা বড় ধরনের সমস্যা ছিল।ক্রিস গেইল সমস্যাটা কাউকে কখনো বুঝতে দেননি।মজায়, হাসিতে উড়িয়ে দিয়েছেন সবকিছু। ব্যাটিং করতে গিয়ে এমন হলে একটু বসে পড়ে পানি খেয়ে আবার শুরু করতেন। কাউকে টের পেতে দিতেন না।সেবার অস্ট্রেলিয়া সফরে আর পারলেন না। ব্যথা বেড়ে গেল, নিঃশ্বাস নিতেই পারছিলেন না। ভর্তি হলেন হাসপাতালে। ডাক্তাররা জানালেন, হার্টের ভাল্বে সমস্যা; অস্ত্রোপচার করাতে হবে। জীবনে কখনো ঘুমের ওষুধও খাননি; অপারেশন তো দূরের কথা। ভয়ে মরে যাওয়ার উপক্রম হলো। তারপরও অপারেশন হলো। জ্ঞান ফিরল। একা একা শুয়ে আছেন পোস্ট অপারেটিভ টেবিলে। আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব কেউ নেই পাশে। ভীষণ একা মনে হচ্ছিল নিজেকে। তারপরও পৃথিবীতে ফিরতে পেরে দারুণ খুশি। মনে মনে বললেন, “শুরু হলো আমার বোনাস জীবন। বাকি এই জীবনে আর কখনো আফসোস করব না। বাকি জীবনটা হবে আমার শুধু উপভোগের। আনন্দ দেবো আর আনন্দ নেবো।”
খাবারের অভাবে ফুটপাতে ক্রিস গেইল:
আমার মনে হয় না ক্রিস গেইলকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার প্রয়োজন আছে।ক্রিস গেইলের বাবা পেশায় ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা ।তিনি বেতন খুব সামান্য পেতেন যার কারণে অসচ্ছলতা তাদের পরিবারে লেগেই থাকত ।আমরা তাহলে চেনার চেষ্টা বাদ দিয়ে একটু জানার চেষ্টা করি। জ্যামাইকার কিংসটনে এক নিম্নবিত্ত পরিবারে অনেকগুলো সন্তানের পর একটি সাধারণ লিকলিকে ছেলে হয়ে জন্ম হয়েছিল গেইলের। সংসারের অবস্থা ছিল যাচ্ছেতাই। মায়ের আগের এক বিয়ে; সেই ঘরের ছেলে-মেয়ে ছিল, নিজেরা অনেকগুলো ভাইবোন ছিলেন। সবমিলিয়ে একটা হৈচৈ পরিবেশ। এতগুলো সন্তানের মুখে রোজ খাবার তুলে দেওয়াটা সহজ কাজ ছিল না। তার বাবা খাবারটা দিতে পারতেন; তবে সেটা নামেমাত্র খাবার ছিল। সারাটা সপ্তাহ গেইলরা চেয়ে থাকতেন ছুটির দিনে একটু ভালোমন্দ খাওয়ার জন্য।ভাল-মন্দ খাবার তো দূরের কথা একবেলা ভাতই গেইল পরিবারের সদস্যদের মুখে চরত না খাবার অভাবে এই গেইল রাস্তায় রাস্তায় বোতল কুড়িয়ে বেড়াতেন
ক্রিস গেইল যেভাবে রাস্তা থেকে ক্রিকেটজগতে আসলেন:
ক্রিস গেইল বলেছেন লুকাস না থাকলে আমি আজ কোথায় থাকতাম জানিনা হয়ত রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতাম লুকাস ক্রিকেট ক্লাবের পরিচর্যায় আমাকে গেইল করে তুলেছে ক্রিকেট জগতে লুকাস এর তত্ত্বাবধানে খেলতে খেলতে জ্যামাইকার নজরে পড়ে গেলেন সাথে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেট বোর্ডও জেনে ফেললেন জামাইকে থেকে আরও একটা বিধংসী ব্যাটসম্যান বেরিয়ে আসছে তাকে নিয়ে নেওয়া হলো অনূর্ধ্ব 19 জাতীয় দলে সেখানে খুব অল্প সময় কাটানোর পর এই জ্যামাইকা প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক হয়ে গেল কয়েক মাসের মধ্যে ওয়ানডে অভিষেক আর মাস ছয়েকের মধ্যেই টেস্টে অভিষেক হয়ে গেল। টেস্টে প্রথম ফিফটি পেলেন 6 ইনিংস পর প্রথম সফরে সিনিয়রদের সাথে বাজে ব্যবহার করেন। যার ফলে তাকে হয়তো বাদেই দেওয়া হবে কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই প্রতিপক্ষ দলের বোলারদের এমনভাবে পেটাতে শুরু করলেন তাকে বাদ দেওয়ার কথা ভাবা দূরের কথা কাছে টেনে নিতে কুন্ঠিত বোধ করলেন না। একজন দানবের মত আক্রমণাত্মক সেরা ব্যাটসম্যান হয়ে উঠলেন তিনি। ক্রিস গেইল হয়ে উঠলেন বল পিটানোর ওস্তাদ ক্রিস গেইল টেস্ট ক্রিকেটে 22 ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছেন সে কথা উল্লেখ না করলে নয়। ক্রিস গেইল মাঠে নেমে প্রথম তিন মাসে দুইটি ফিফটি আর একটি সেঞ্চুরি ।এবার গেইলের নিশ্চয়ই দামটা বুঝা যাবে। এইভাবে আস্তে আস্তে কিরিশগেল ফুটপাত থেকে উঠে এসে হয়ে গেলেন ক্রিকেট জগতের ক্রিস গেইল বা সিক্স মেশিন বা অতি দানব।
খেলোয়াড়ী জীবন:
১৯ বছর বয়সে জামাইকার পক্ষ হয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটান। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষ হয়ে যুবদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলেন। এগার মাস পর একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলেন। এর ছয় মাস পর টেস্ট ম্যাচ খেলেন। ক্রিস গেইল সাধারণতঃ ইনিংসের গোড়াপত্তন করেন ও বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান হিসেবে ইতোমধ্যেই নিজের পরিচয় তুলে ধরেন। জুলাই, ২০১১ সালে গেইল (১৭৫) এবং ড্যারেন গঙ্গা (৮৯) কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব, বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২১৪ রানের জুটি করে নতুন রেকর্ড গড়েন।
টুয়েন্টি ২০
২০০৭ সালের বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতার প্রথম খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৫৭ বলে ১১৭ রান করেন যা একসময় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস হিসেবে রেকর্ডভূক্ত হয়েছিল। এছাড়াও সেঞ্চুরিটি ছিল টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম। এরফলে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ৩টি পদ্ধতির (টেস্ট, একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এবং টুয়েন্টি২০ প্রত্যেকটিতেই সেঞ্চুরি করে বিরল রেকর্ড গড়েন। এছাড়াও তিনি টুয়েন্টি২০ ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ১৩টি হাফসেঞ্চুরি করেন। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লীগের উদ্বোধনী আসরে প্রথম ফ্রাঞ্চাইজ খেলোয়াড় হিসেবে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তিনি টি২০ বিশ্বকাপে দুইবার সেঞ্চুরি করেন৷
২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ তারিখে ম্যানুকা ওভালে অনুষ্ঠিত গ্রুপ-পর্বের ৩য় খেলায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অনেকগুলো রেকর্ড গড়েন। তার অসামান্য ব্যাটিংসহ বোলিং নৈপুণ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭৩ রানে বিজয়ী। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। ঐ খেলায় বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ও প্রথম অ-ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে একদিনের আন্তর্জাতিকে দ্বি-শতক হাঁকান। এছাড়াও গেইলের দ্বি-শতকটি একদিনের আন্তর্জাতিকে দ্রুততম। তার বিধ্বংসী ইনিংসে ১৬ ছক্কার মার ছিল। এরফলে, রোহিত শর্মা ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের সাথে একদিনের আন্তর্জাতিকে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ডে ভাগ বসান গেইল। মারলন স্যামুয়েলসের সাথে ৩৭২ রানের জুটি গড়ে একদিনের আন্তর্জাতিকের ইতিহাসে যে-কোন উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন।
আইপিএল:
২৩ এপ্রিল ২০১৩ সালে আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে পুনে ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ৩০ বলে সেঞ্চুরি করেন।যেটি বর্তমানে টি-টুয়েন্টি এবং ক্রিকেটের যে-কোন ফরম্যাটের ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরি। পূর্বতন দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের ৩৪ বলে। ম্যাচে তিনি অপরাজিত ১৭৫* (৬৬ বল) রান করেন। এ ইনিংসে তিনি টুয়েন্টি২০ ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ১৭টি ছক্কা হাঁকান।এরফলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের খেলোয়াড় ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি ম্লান হয়ে যায়।
উপসংহার:
প্রিয় বন্ধুরা আপনারা ক্রিস গেলের ভক্ত ভক্ত হয়ে থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন আশাকরি আমাদের এই পোষ্ট আপনাদের অবশ্যই ভালো লাগবে ভালো লাগলে বন্ধু-বান্ধবের মাঝে শেয়ার করবেন ।আর আমাদের ওয়েবসাইটে যুক্ত থাকবেন। কমেন্ট করে জানাতে আমাদের ভুলবেন না ।সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ।