হ্যাল্লো বন্ধুরা আসালামুয়ালাইকুম আমি আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি উন্নত জাতের গাভীর পালন ও দুগ্ধ খামার এর অজানা বিশেষ কিছু তথ্য নিয়ে। বর্তমান সময়ে গ্রাম অঞ্চলে দেখা যায় অনেক মানুষ নানা জাতের গাভী পালন করে আসছে। তবে অনেকের মুখে শোনা যায় যে গাভী পালন করে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তাই আর যেন কোনো মানুষ এরকম বিপদে না পড়ে সে জন্য এই পোস্ট টি ভালো করে পরে ফেলি।
প্রাথমিক প্রস্তুতি:
পরিকল্পিতভাবে গাভী পালন একটা লাভজনক কার্যক্রম অল্প মাঝারি বেশি সব ধরনের পুঁজি দিয়ে সুষ্ঠুভাবে গাভী পালন করলে অনেক লাভবান হওয়া যায়।
গাভী পালনের জন্য ঘরটি মোটামুটি খোলামেলা জায়গায় হতে হবে; বাঁশ, ছন, খড়, পাটখড়ি দিয়ে ঘর নির্মাণ; ঘরের মেঝে ঢালু ও ড্রেনের ব্যবস্থা রাখতে হবে যাতে চোনা ও পানি গড়িয়ে বেরিয়ে যেতে পারে; খাদ্য ও পানির পাত্রগুলো প্রতিদিন নিয়মিত পরিষ্কার করা; খাওয়া শেষ হলে পাত্রগুলো ঢেকে রাখতে হবে। গরুকে নিয়মিত গোসল করাতে হবে; প্রতিদিন নিয়মিত গোয়াল ঘরের গোবর-চোনা পরিষ্কার করে নির্দিষ্ট স্থানে বা গর্তে জমা করতে হবে। যা পরবর্তীতে মূল্যবান সারে পরিণত হয়; গরুর গায়ের আঠালি, ডাসা (মাছি), জোঁক অবাঞ্ছিত পোকামাকড় বেছে ফেলতে হবে; গরুর স্বাস্থ্য নিয়মিত পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে; উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে গবাদিপশুকে গোবসন্ত, তরকা, বাদলা, গলাফুলা, ক্ষুরা রোগের প্রতিষেধক টিকা দিতে হবে; গবাদিপশুর রোগ দেখা দিলে প্রাণিচিকিৎসক বা নিকটস্থ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।: যে কোনো কিছু গড়তে সবার আগে প্রয়োজন প্রাথমিক প্রস্তুতি। এ প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করে যে কোনো কাজের সফলতার ও ব্যর্থতা। ডেইরি ফার্ম গড়ে তুলতে প্রয়োজন আর্থিক সঙ্গতি, অভিজ্ঞতা ও গরুর নিরাপদ আশ্রয়। প্রথমেই বিশাল ফার্ম তৈরিতে হাত না দিয়ে ছোট পরিসরে কাজে হাত দেয়া ভালো। ৫ থেকে ৬টি গরু নিয়ে যাত্রা করে আস্তে আস্তে ফার্মকে সম্প্রসারণ করাই উত্তম। ২টি গরুর জন্য একজন দক্ষ লোক নিয়োগ করা গেলে ভালো। তবে খেয়াল রাখতে হবে লোকটির গরুর যত্ন নেয়ার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে কিনা।
স্থান নির্বাচন :
যেখানে যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো এবং দুধ বিক্রির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে এসব এলাকার আশপাশেই ডেইরি ফার্ম গড়ে তোলা প্রয়োজন। চারপাশে উঁচু দেয়াল, পরিবেশসম্মত আবাসন, পর্যাপ্ত আলো-বাতাস এবং গরুর বিশ্রাম ও হাঁটাচলার জন্য জায়গা থাকতে হবে। গরুর ওষুধের দোকান, কাঁচা ঘাসের খামার আশপাশে থাকলে ভালো।
খাবার সরবরাহ :
একটা সুন্দর খামার প্রকল্পের কথা চিন্তা করলে সর্ব প্রথম গুরত্ব দিতে হবে গাভীর খাবারের উপরপর্যাপ্ত ও সঠিক খাবার নানা পেলে সঠিক পরিমাণ দুধ পাওয়া যায় না।অনেক সময় বাসি ও পচা খাবার গরুকে সরবরাহ করা হয়। যা কখনোই ঠিক নয়। এতে করে গরুর বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সবসময়ই খেয়াল রাখতে হবে গরুর খাদ্য যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পুষ্টিমান সম্পন্ন হয়। এজন্য পচা বা দীর্ঘদিন রাখাগাভীর গর্ভধারণ ও গর্ভকালীন আলাদাভাবে পরিচর্যা করতে হবে। এ সময় স্থানীয় প্রাণিচিকিৎসকের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে।
পরিচর্যা :
উন্নত জাতের গাভী ডেইরি ফার্মের জন্য সহায়ক। এক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ান গাভীর জাত বেছে নেয়া যেতে পারে। এজন্য পশু খামারি এবং প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে নিলে ভালো হয়। প্রতিটি গরুর জন্য আলাদা মশারি, ফ্যান, ময়লা পরিষ্কারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। আলোর জন্য লাইটিং এবং পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারেও নজর দেয়া জরুরি।
গাভীর দুধের উৎপাদন যেভাবে বাড়ানো যায়:
খাদ্য গাভীর দুধ উৎপাদন ও দুধের গুণগতমানের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে। অধিক পরিমাণ খাদ্য খাওয়ালে বেশি দুধ পাওয়া যায়। তবে খাদ্য অবশ্যই সুষম হতে হবে। গাভীকে সুষম খাদ্য না খাওয়ালে দুধ উৎপাদনের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায় এবং দধের গুণগতমানও কমতে বাধ্য। কারণ খাদ্যে বিদ্যমান উপাদানগুলো ভিন্ন অবস্থায় দুধের মাধ্যমে নিঃসৃত হয়। খাদ্যে দুধের মাখনের উপস্থিতির পরিমাণ কম-বেশি করতে পারে। যে ধরনের খাদ্যের জন্য গাভীর দুধের মাখনের হার কম হতে পারে। তাহলো-
১. মিহিভাবে গুঁড়া করা খড় খাওয়ালে;
২. পিলেট জাতীয় খাদ্য খাওয়ালে;
৩. মাত্রাতিরিক্ত দানাদার খাদ্য খাওয়ালে;
৪.অতিরিক্ত রসালো খাদ্য খাওয়ালে।