বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
প্রিয় ভিউয়ার্স আসসালামু আলাইকুম আশা করি সবাই ভাল আছেন। আল্লাহর রহমতে আমিও ভাল আছি। আজকে আমি আপনাদের সামনে ঈদুল আযহা নিয়ে কথা ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু হাদিস আলোচনা করব । আপনারা আমাদের এই পোষ্টের সাহায্যে খুব সহজেই ঈদুল আযহা নিয়ে কথা ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু হাদিস ধারণা লাভ করতে পারবেন। তাই আপনারা আর দেরি না করে গুরুত্ব সহকারে আমাদের পোস্টটি পড়ুন।
ঈদুল আযহা নিয়ে কিছু কথা:
ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানে খুশি। ঈদুল আযহা কেবল পশু কুরবানী করা এবং আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে আনন্দ প্রমোদকে বুঝায় না বরং ঈদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে উৎসর্গ নিজের ভিতরে থাকা পশুত্বের মূলত পতন এবং একমাত্র রবের সন্তুষ্টি লাভের জন্য কাজ করা। প্রতিটি মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তাদের সমর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। কুরবানীর মাধ্যমে মানুষ আল্লাহ তাআলার কাছে প্রিয় বান্দা হয়ে উঠতে পারেন। কুরবানী হচ্ছে আল্লাহর দেয়া অসীম দান। কুরবানীর মাংস গরিবদের প্রতিবেশীদের ও আত্মীয়-স্বজনদের ভাগ করে দেয়া হয়। কুরবানী করার পর মাংস তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজের এক ভাগ আত্মীয়-স্বজন ও এক ভাগ গরিব মিসকিন অথবা সমাজে দেয়া হয়। অথবা কুরবানী করার পর ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী মাংস ভাগ করা হয়। কুরবানীর পশুর চামড়া বিক্রির টাকা দান করা নির্দেশ রয়েছে।
ঈদুল আযহা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু হাদিস:
প্রিয় বন্ধুরা আপনারা যারা ঈদুল আযহা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু হাদিস সংগ্রহ করার জন্য নেটে সার্চ করে থাকেন তাদের জন্য আমি কিছু বাছাইকৃত ঈদুল আযহা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু হাদিস দিয়ে দিলাম।যাদের প্রয়োজন তারা খুব সহজেই আমার আর্টিকেল থেকে আপনার প্রয়োজনীয় ঈদুল আযহা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু হাদিস গুলো ডাউনলোড করতে পারবেন।
1. ঈদে তুমি তোমার মা’কে খুশি রাখো।আল্লাহ তোমাকে খুশি রাখবেন।-হযরত মুহাম্মদ (সঃ)
2. নবী মুহাম্মদ (সাঃ) একবার বলেছিলেন: “যে ব্যক্তি কুরবানী করার সামর্থ্য রাখে কিন্তু সে আদায় করে না, তাহলে সে যেন আমার ঈদগাহের (যেখানে ঈদের সালাত আদায় করা হয়) কাছে না আসে।” [ইবনে মাজাহ 2123], [আহমদ 8273]।
3. নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদের দিনে রাস্তা পরিবর্তন করতেন। (বুখারী 986)
4. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল আযহার দিনে আল-বাকী (মদিনার কবরস্থান) দিকে গেলেন এবং দুই রাকাত সালাত (ঈদ-উল-আযহা) আদায় করলেন এবং তারপর আমাদের মুখোমুখি হয়ে বললেন, “এই দিনে আমাদের মধ্যে, আমাদের প্রথম ইবাদত হল নামায পড়া এবং তারপর আমরা ফিরে এসে কুরবানী জবাই করব এবং যে এটা করবে সে আমাদের সুন্নাতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে এবং যে তার আগে (অর্থাৎ নামাযের আগে) কুরবানী জবেহ করবে, তাহলে সেটা একটা ব্যাপার। যা তিনি তার পরিবারের জন্য আগে প্রস্তুত করেছিলেন এবং এটি নুসুক (কুরবানী) হিসাবে গণ্য হবে না।” এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, “হে আল্লাহর রাসূল! আমি (নামাযের আগে পশু) জবাই করেছি কিন্তু আমার একটি ছোট মেয়ে আছে- ছাগল যা বয়স্ক ভেড়ার চেয়ে ভালো।” রাসুল (সাঃ) তাকে বললেন, “এটিকে জবাই কর। কিন্তু তোমার পরে অন্য কারো জন্য অনুরূপ কুরবানী যথেষ্ট হবে না।
5. রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মদিনা আগমন করলে দেখলেন মদিনা বাসিরা দুটি ঈদ পালন করছে। তা দেখে তিনি বললেন তোমাদের দুটি দিন ছিল যাতে তোমরা খেলাধুলা করতে। এখন ওই দিনের পরিবর্তে আল্লাহ তোমাদেরকে দুটি উত্তম দিন প্রদান করেছেন একটি হলো ঈদুল ফিতর এবং অন্যটি হলো ঈদুল আযহার দিন আবু।( দাউদ 1136, নাসাউ 1556)
6. মহানবী ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনে মুসাল্লার দিকে অগ্রসর হতেন; সর্বপ্রথম যে কাজটি শুরু করা হয়েছিল তা ছিল সালাত এবং তারপর তিনি লোকদের সামনে দাঁড়াতেন এবং লোকেরা তাদের কাতারে বসে থাকতেন। অতঃপর তিনি তাদেরকে প্রচার করতেন, তাদেরকে উপদেশ দিতেন এবং আদেশ দিতেন (অর্থাৎ খুৎবা)। এবং তার পরে যদি তিনি কোন অভিযানের জন্য সৈন্যদল পাঠাতে চান তবে তিনি তা করতেন; অথবা যদি তিনি দিতে এবং আদেশ করতে চান, তিনি তা করতেন এবং তারপর প্রস্থান করতেন। লোকেরা এই রীতি অনুসরণ করেছিল যতক্ষণ না আমি মদিনার গভর্নর মারওয়ানের সাথে ঈদুল আযহা বা ঈদুল ফিতরের নামাযের জন্য বের হলাম। আমরা যখন মুসাল্লায় পৌঁছলাম, সেখানে কাথির বিন আস-সালতের তৈরি একটি মিম্বর ছিল। মারওয়ান নামাজের আগে মিম্বরে উঠতে চেয়েছিলেন। আমি তার কাপড় ধরলাম কিন্তু তিনি সেগুলো টেনে নিয়ে মিম্বরে আরোহণ করলেন এবং নামাযের আগে খুৎবা দিলেন। আমি তাকে বলেছিলাম, “আল্লাহর কসম, তুমি (রাসূলের রীতি) পরিবর্তন করেছ।” তিনি বললেন, হে আবু সাঈদ! আপনি যা জানেন তা চলে গেছে। আমি বললাম, “আল্লাহর কসম! আমি যা জানি না তা অপেক্ষা উত্তম।” মারওয়ান বললেন, লোকেরা নামাযের পর আমাদের খুৎবা শুনতে বসে না, তাই আমি নামাযের আগে খুৎবা দিলাম। (বুখারী অধ্যায় 15, দুটি উৎসব (ঈদ) আবু সাইদ আল-খুদরি)
শেষ কথা:
বন্ধুরা আমি এই পোষ্টের মাধ্যমে ঈদুল আযহা নিয়ে কথা ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু হাদিস আলোচনা করেছি। আশা করি, এই পোস্ট আপনাদের সবার ভালো লাগবে।এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। সবাই ভাল থাকবেন আল্লাহ হাফেজ………………