বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
এই দিবসটি প্রতি বছর মার্চ মাসের ৮ তারিখে পালিত হয়। সারা বিশ্বব্যাপী নারীরা একটি প্রধান উপলক্ষ হিসেবে এই দিবস উদ্যাপন করে থাকেন।বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিনটি নানান আনুষ্ঠানিকতায় উদযাপিত হচ্ছে। নারীর অধিকার রক্ষায় বিশ্বব্যাপী সমতাভিত্তিক সমাজ-রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে প্রতিবছর এই দিনে দিবসটি উদযাপন করা হয়।২০২০ সালে গৃহীত প্রতিপাদ্য ছিল, প্রজন্ম হোক সমতার, সকল নারী অধিকার। এই সহকর্মী, মহিলা বন্ধু, মা, বোন কিংবা স্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। দেখে নিন কেমন মেসেজ (Message) পাঠাবেন।ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডাব্লিউইএফ) গত বছর ৩০ মার্চ প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে নারী-পুরুষের সমতার দিক থেকে বিশ্বে ১৫৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৬৫তম।এ বছর নারী দিবসের মূল ভাবনা বা থিম হলো ‘পক্ষপাত ভাঙা’ (#ব্রেকদ্যবায়াস)। দ্য ইন্টারন্যাশনাল উইমেন্স ডে ওয়েবসাইটে জেন্ডার-সমতাভিত্তিক একটি বিশ্ব নির্মাণের আহ্বান জানানো হয়েছে যেখানে কোনো পক্ষপাত থাকবে না এবং নারীরা সব ধরনের স্টেরিওটাইপ ও বৈষম্য থেকে মুক্ত থাকবে। জাতিসংঘের থিম হলো ‘টেকসই আগামীর জন্য আজ জেন্ডার সমতা’ (জেন্ডার ইক্যুয়ালিটি টুডে ফর আ সাসটেইনেবল টুমরো)। অর্থাৎ অদূর ভবিষ্যতে একটি টেকসই পৃথিবী গড়তে হলে এখনই নারীর প্রতি বৈষম্য ও পুরুষের প্রতি পক্ষপাত দূর করে জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে হবে।নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী রোকেয়া কবীর মনে করেন দিবসকেন্দ্রিক এই উদযাপন আরও সুনির্দিষ্ট করে পালনের দরকার আছে। এটি কেবল উদযাপন তাও নয়। এর রাজনীতি আছে। নারী পুরুষের সমতার প্রশ্নে কোন আপসের জায়গা নেই। তবে নারীর অগ্রগতিতে পুরুষকে সম্পৃক্ত করার প্রয়োজন আছে। যতদিন না সেই সমতা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে ততদিন নারীর অধিকারের প্রশ্নগুলোকে সামনে আনার জন্য যতরকমের বিশেষ ব্যবস্থা করা যায় সেটি করতে হবে।
ইতিহাস:
এই দিবসটি উদ্যাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেই মিছিলে চলে সরকার লেঠেল বাহিনীর দমন-পীড়ন।এরপর 1909 সালের 28 শে ফেব্রুয়ারি 19 অনুষ্ঠিত হয় সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন যার নেতৃত্বে ছিলেন জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিন ।এবং সংগঠন ছিল ডেমোক্রেটিক নারী সংগঠন। পরবর্তীতে দ্বিতীয়বারের মতো 910 সালে আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে এতে প্রায় 17 টি দেশ থেকে 100 জন নারী প্রতিনিধি যোগ দিয়েছিল।চারটি ধারায় জীবন ও জীবিকার নানা ক্ষেত্রে নিজের প্রাপ্য অধিকার ও মর্যাদা আদায়ে নারীকে লড়াই করতে হয়েছে এবং এই লড়াই এখনো চলমান। এই বিষয়গুলোতে নারীর অর্জন অনেক; তবে তা সম্পূর্ণ তো নয়ই, একে যথেষ্টও বলা যায় না। তাই, নারীর বিরুদ্ধে চলমান বৈষম্য ও সহিংসতা দূর করতে হবে এবং সমাজের সব মানুষের মধ্যে অসাম্য দূর করতে হবে। এজন্য আমাদের সবাইকে আন্তরিক হতে হবে। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সব পরিসরে নারীরা যেন পরিপূর্ণভাবে বেড়ে ওঠার অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয় এবং নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সমাজের সব মানুষ যেন স্বতন্ত্র ও পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে বিকশিত হতে পারে, এমন পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারলে টেকসই উন্নয়ন কখনোই অর্জন করা সম্ভব হবে না।
বিশ্বের প্রেক্ষাপটে নারী:
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারী:
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের উক্তি:
- প্রত্যেক পুরুষের একজন মহিলার প্রয়োজন হয় যখন তার জীবন ছন্নছাড়া হয়ে যায়। কারণ দাবা খেলার মতোই রানী রাজাকে সুরক্ষা দেয়। শুভ নারী দিবস ২০২২।
- * সমান অধিকার বিশেষ অধিকার নয়। শুভ আন্তর্জাতিক নারী দিবস!
- * যেই মেয়েরা স্বপ্ন দেখে, তাঁরা দূরদর্শী নারী হয়। শুভ নারী দিবস বিশ্বের সকল মহিলাকে।
- * নারী দিবসের অনেক শুভেচ্ছা ! শুভ হোক রোজ।
- * আমার জীবন এতটা গুছিয়ে দেওয়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ। নারী দিবসের শুভেচ্ছা।
- * পরিস্থিতি যতই কঠিন হোক না কেন, তোমার উৎসাহ দেওয়া কথাগুলি আমাকে সব সময়ে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। শুভ নারী দিবস।
- * “স্বপ্ন থেকে সাফল্যের পথ বিদ্যমান।” – কল্পনা চাওলা
- * “যদিও পৃথিবী দুঃখ- কষ্টে ভরা, তবুও এটি কাটিয়ে ওঠা যায়।” – হেলেন কেলার
- * আজকের দুনিয়ায় এমন কোনও কাজ নেই যা মেয়েরা পারে না। শুভ আন্তর্জাতিক নারী দিবস।
- * তুমি আমার পাশে যখন থাকো না, তখন আমার জীবন একেবারে ফাঁকা মনে হয়। আমার সঙ্গেই থেকো সব সময়। নারী দিবসের শুভেচ্ছা!
- * “নারীদের সকল প্রকার নিপীড়ন থেকে মুক্তি না দেওয়া হলে, স্বাধীনতা অর্জন করা যায় না।” – নেলসন ম্যান্ডেলা
- * প্রতিটি দিনই হোক নারী দিবস। শুভেচ্ছা সকল নারীদের।